||ইমাম তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ||
"শাময়েলুন নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, কিতাবুশ শামায়েল কিংবা শামায়েলে তিরিমিযী"
হাদিস ভিত্তিক চরশো হাদিস সম্বলিত এই সুপ্রসিদ্ধ সিরাত গ্রন্থটির নাম কে না শুনেছে? কে জানে? হ্যাঁ, এই গ্রন্থটির সংকলকই হলেন ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী!
এই গ্রন্থ ছাড়াও তিনি আরো অসংখ্য গ্রন্থ সংকলন ও রচনা করেছেন। যেই গ্রন্থের জন্যে তিনি সারাটা পৃথিবীবাসির নিকট অধিক গ্রহণীয় তা হলো সুনানুত তিরমিজি। যে গ্রন্থের জন্যেই তিনি আজ ইমাম তিরমিজিরূপে সারা পৃথিবীর উম্মাতে মুসলিমাহ'র নিকট অধিক পরিমাণে স্মরণীয়-বরণীয়।
ওনার মূল নাম মুহাম্মাদ। পিতার নাম ঈসা। দাদার নাম সাওরাহ। উপনাম আবু ঈসা। নিসবতী নাম তিরমিযী। মূলত ওনাকে তিরমীযী বলা হয় তিরমিজ নামক শহরে জন্মগ্রহণ করায়। এই শহর উত্তর ইরানের বলখ নদীর পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। সেখানে ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সাহিত্যের ব্যাপক বিকাশ সাধন করে। যার কারণে তা 'শহরে জননী' কিংবা 'পুরুষের শহর' হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। শহরটির চারপাশ ছিলো প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। প্রাচীরের ইটগুলোও ছিলো অত্যন্ত সুন্দর। মনোরম। কুরআন হাদিস চর্চার মারকাযও হয়ে ওঠে সে শহর। সেই শহরেই বুগী নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পূর্ব পুরুষ পূর্বে এই শহরে ছিলেন না। পরে এখানে এসে বসবাস শুরু করেন।
এখানে তিনি ২০৯ হিজরি মোতাবেক ৮২৪ খিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছেন। আরবি জিলহজ্জ্ব মাস ছিলো সেটা। তবে কেউ কেউ মনে করেন তাঁর জন্ম ২১০ হিজরি সনে।
তিনি ধীরে ধীরে বড়ো হতে লাগলেন। পড়াশোনা শিখতে লাগলেন। ধীরে ধীরে। মা-বাবার হাতেই তিনি প্ররাথমিক শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি ৬ বছর বয়সে তাঁর নিজ গ্রাম বা তিরমিজ শহরের উপশহর বুগের একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্ত হন। সেখান থেকে ইলমে দ্বীন হাসিল করার মহান কাজে নেমে পড়লেন। বিশ বছর বয়স অবধি স্থানীয় সকল উঁচু মানের শিক্ষকদের থেকেই শিক্ষা অর্জন করে গেছেন।
জ্ঞানের দ্বারকে বিকশিত করার সুতীব্র জোঁক থেকে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশ পরিভ্রমণ করেন। ইলমুল হাদিসের খোঁজে ছুটে গিয়েছেন মক্কা, মদিনা,বসরা, কূফা, ফিলিস্তিন, মিশরসহ নানান দেশে। নানান অঞ্চলে। গিয়েছিলেন ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ'র শহর বুখারাও। তবে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন, হাদিস নিয়েছেন এবং বর্ণনা করেছেন কূফার মুহাদ্দিসদের থেকে। এবং সেখানকার ৪২ জন মুহাদ্দিস থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন তিনি।
কুতুবে সিত্তার ইমামদের প্রায় সকলের জীবনীতেই দেখি তৎকালীন ইসলামি সম্রাজ্যের রাজধানী বাগদাদে সফর ছিলো তাদের। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ)এর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছেনই। ব্যতিক্রম ইমাম আবু ঈসা তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ। তিনি কখনোই বাগদাদ যায় নি। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের (রহ.) থেকেও কোনো হাদিসের জ্ঞান আহরণ করেন নি,সরাসরি।
হাদিস শাস্ত্রে বিশ্ব সম্রাট ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ একমাত্র ওনাকেই এবং ওনার সম্পর্কেই বলেছেন যে,
আপনি আমার কাছ থেকে যতোটুকু উপকৃত হয়েছেন, আমি তারচেয়েও বেশি উপকৃত হয়েছি আপনার কাছ থেকে!
দুজনের মধ্যে সম্পর্কও ছিলো দারুণ ভালো। একে অন্যকে খুবই মুহাব্বাত করতেন। ভালোবাসতেন। মূলত তাঁর শিক্ষকই ছিলেন ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ তবুও কোনো অহংবোধ ছিলো না উভয়ের মাঝে। ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ ইমাম তিরমিজি থেকেও হাদিস বর্ণনা করেছেন। এই যে বিষয়টা, এটাও কিন্তু ইমাম তিরমিজিকে অহংকারে ডুবিয়ে দেয় নি। এবং তিরমিজিও তাঁর গ্রন্থে বহুবারই ইমাম বুখারীর নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও তিনি ইমাম আবু দাউদ ও মুসলিম রহঃ এর কাছ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুসলিমও তার সহিহ মুসলিম গ্রন্থে ইমাম তিরমিজির বর্ণিত হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন।
ইমাম তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহর থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই কিন্তু তিরমিজি শরীফ রচনা করেছেন। এদেশে এবং পাক-ভারত উপমহাদেশের মাদরাসাগুলোতে কিন্তু তার রচিত তিরমিজি শরীফকে গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হয়। তাঁর স্মৃতিসাগরে সাঁতার কাটতে থাকা, জমে থাকা লক্ষ লক্ষ হাদিস থেকে বাছাই করে মাত্র ৩৯৫৬ বা তারচে' কিছু কমবেশ হাদিস দিয়ে এই গ্রন্থখানি রচনা করেন। গ্রন্থখানি তিরমিজি শরীফ নামে বিশ্বব্যাপি সমাদৃত-পরিচিত হলেও কিন্তু তার নাম হলো ;
"আল-জামি আল মুখতাসার মিন আস-সুনান আন-রাসুলিল্লাহ"
এই গ্রন্থ রচনা করার পরে তিনি করেছেন এক দুর্দান্ত উক্তি। তিনি বলেন:
"যার ঘরে এ আমার রচিত এই কিতাবখানি তিরমিজী) থাকবে, সে যেনো মনে করে যে, তার ঘরে স্বয়ং নবী করীম (স.) অবস্থান করেছেন এবং (তার সাথে) কথা বলছেন।’
প্রখ্যাত হাদিস হাদিস বিশারদ শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দীস দেহলভী (রহিমাহুল্লাহ) সুনানুত তিরমিজি সম্পর্কে বলেন, “এই হাদিসগ্রন্থ খুবই সুসজ্জিত এবং এতে হাদিসগুলো সংকলিত হয়েছে অত্যন্ত সুবিন্যস্তভাবে। এখানে পুনরুক্ত হাদীসের সংখ্যা খুবই কম ৷”
এই যেতিরমিজি শরীফ, এটার আরেকটি বৈশিষ্ট্য এই যে, এতে ফকীহ্গণের মতামত তুলে ধরা ছাড়াও, বিভিন্ন মাযহাবের দলীল-প্রমাণ সমূহের বিশ্লেষণ রয়েছে ৷ এই কিতাবটি চারটি শ্রেণীতে সাজানো হয়েছে। সেগুলো হলো:
প্রথমত সেইসব হাদিস, যেগুলো বুখারী ও মুসলিমের সাথে সম্মত।
দ্বিতীয়ত সেসকল হাদিস, যা বুখারী ও মুসলিমের চেয়ে কম মানসম্মত কিন্তু নাসাই ও আবু দাউদের সাথে সম্মত।
তৃতীয় সেসব হাদিস যা নিয়ে কিছু মতবিরোধ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তিনি সেই মতবিরোধকে কিছুটা মীমাংসা করে সংকলন করেছেন।
চতুর্থ ওই হাদিসসমূহ যা ফিকহ বিশেষজ্ঞদের মতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি এই হাদিসের গ্রন্থ সংকলনের পূর্ব পর্যন্ত অসংখ্য উস্তাদদের নিকট থেকে জ্ঞান আহরণ করেছেন। শুধু ইমাম বুখারী ও মুসলিমের উস্তাদগণের মধ্য থেকে ২৭ জনই ওনারও উস্তাদ ছিলো। এই গ্রন্থ রচনার পরে প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থীকে এর পাঠ দিয়েছেন।
ইমাম তিরমিজি (রহিমাহুল্লাহ)। ওনার অন্তর ছিলো আল্লাহ ভীরুতায় বিগলিত। যাপন করতেন বর্ণিল তাকওয়াপূর্ণ জীবনধারা। আল্লাহর ভয়ে তিনি কঁদতেন। খুবই কাঁদতেন। অঝোরে কাঁদতেন। পরকালের জবাবদিহিতা, আল্লাহর সমানে দাঁড়ানোর অনুভূতি ওনাকে স্থির থাকতে দিতো না। কাঁদতে কাঁদতে একসময় তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। পূর্বেই তো বলা হয়েছে যে, তিনি ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)কে অত্যন্ত ভালোবাসতেন এবং শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর শোকেও তিনি ছিলেন বিহ্বল। ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ'র ইন্তিকালের পরে আরো ২৩ বছর তিনি জীবিত ছিলেন। আর সেই সময় মানুষ দূরদূরান্ত থেকে তাঁর কাছে হাদিসের পাঠ নিতে আসতো। তিনিও মশগুল হয়ে থাকতেন এই শেখানো এবং পাঠ-পঠনের কাজে।
এক অনন্য মেধা ও স্মৃতি শক্তির অধিকারী ছিলেন ইমাম তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ। আসোলে এতোদিনের আলোচিত সকল মুহাদ্দিস-ইমামগণই দুর্দান্ত মেধা-মনন-স্মৃতির অধিকারী ছিলেন। না থাকলে তো আজ আমরা ওনাদের নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা বা লেখার প্রয়োজন হতো না। ওনার অসম্ভব স্মৃতি শক্তির বিষয় নিয়ে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) একটা ঘটনার উল্লেখ করেছেন। তা হলো, একবার তিনি খুব উঁচু মাপের একজন মুহাদ্দিস থেকে হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন। দুটো হাদিস শুনেননি তিনি। তিনি এই হাদিসগুলো সেই মুহাদ্দিস থেকে সরাসরি তাঁর কন্ঠে শোনবার মনস্থির করলেন। যেই ভাবা সেই কাজ। তিনি ছুটে গিয়েছেন তাঁর কাছে। যাবার পরেই সেই মুহাদ্দিস বললেন যে, যাও; আমার যে দুটো হাদিস তোমার নিকট লিপিবদ্ধ, সে হাদিসগুলো নিয়ে এসো। তিনি ছুটলেন বাড়ির দিকে। খুঁজলেন ক্ষণিক৷ পেলেন না। হন্তদন্ত হয়ে এবার ছুটে গিয়েছেন বাড়ি। ফিরলেন সাদা কাগজ নিয়ে। বসে পড়লেন সেই মুহাদ্দিসের সম্মুখে। আদবের সাথে। বিনয়ী হয়ে। একপর্যায়ে সেই উস্তাদ দেখলেন তাঁর কাছে হাদিস সমূহ লিপিবদ্ধ নেই। সাদা কাগজ। তিনি রেগে গেলেন। ইমাম তিরমিজি ওনাকে সব খুলে বললেন। দিলেন বুঝিয়ে। খুবই দৃঢ়তার সঙ্গেই বললেন সবগুলো হাদিসই মুখস্থ আছে তাঁর। ওনার সেই উস্তাদ তা শুনতে চাইলেন। একে একে তিনি শুনিয়ে দিলেন সবগুলো। কিছুটা বিস্ময় ছেয়ে গেছে তাঁর চেহারার মাঝে। বললেন -- মনে হয় আপনি এগুলো আগেই স্মৃতিতে ধারণ করে রেখেছেন। তিনি বললেন না। আমি এসব আপনার থেকেই শুনেছি। শিখেছি। আপনি আমাকে এখুনি কিছু হাদিস শোনাতে পারেন।
ওনার সেই শিক্ষক তা-ই করলেন। খুবই শক্তপোক্ত জটিল ৪০ টি হাদিস ওনার সামনে বললেন। একে একে। তাপর বললেন- এবার তুমি আমাকে এগুলো শুনাও তো দেখি। কতোটা পারো তুমি দেখি, ভাবখানা এমন।
আল্লাহর ওপর আস্থা আর ভরসা নিয়ে ইমাম তিরমিজি এবার একে একে বলে যেতে লাগলেন সবগুলো । একবারে চল্লিশটা পুরোপুরিই। ভীষণ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকলেন তাঁর দিকে। অধিক আশ্চর্যে তিনি আশ্চর্যন্বিত। আবার খুশির ঝিলিক চমকানোটাও তো স্বাভাবিক। তিনি বিরাট বিস্ময় নিয়ে তাঁকে বললেন, তোমার মতো এতোটা স্মৃতির অধিকারী, মেধার সঞ্জীবণী আমি আর দেখিনি কারো!
এমন আরো একটি ঘটনা আছে, তখন তিনি অন্ধ। দৃষ্টি শক্তিহীন। জ্যোতি নেই চোখে। সে সময়ে একবার তিনি হাজ্জে বাইতুল্লাহ'র উদ্দেশে বের হলেন। উটের পিঠে বসা তিনি। হঠাৎ একস্থানে তিনি মাথা ঝুঁকিয়ে দিলেন। নিচের দিকে। সকলকেও তা-ই করতে বললেন। বিস্ময় বিস্ফোরিত চোখ সকলের। সকলেই এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন এই স্থানে একটা গাছ রয়েছে। বিরাট! তখন সকলেই বললেন এখন তো এখানে কোনো ধরণের বৃক্ষরাজি নেই। সেই গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। পথিকদের পেরোতেহতে কষ্ট হয়। সে কারণে ।
সকলেই এই বৃদ্ধ বয়সে বহুকাল আগের কোনো একটা পথের, কোনো একটা গাছের বিষয়ও তাঁর স্মৃতির সাগরে নিমজ্জিত হয়ে আছে দেখে বিমুগ্ধ হলেন!
আসোলে যাঁরা সারাক্ষণ থাকে রব্বুল আলামিনের অনুপম স্মরণে নিমজ্জিত। পাপের পথে যাদের একটা পশমও যায় না, তাঁরা এমন দুর্দান্ত স্মৃতি শক্তির অধিকারী হবে না তো কি আমরা হবো? ইশশ! আমরাও যদি এমন অসাধারণ মেধা আর স্মৃতির অধিকারী হতাম.....!!হতে পারতাম যদি তাঁদের মতোই সত্যিকারের মু'মিন!
ইমাম তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ'র গ্রন্থে সংকলিত, প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদিস আছে, এই হাদিসখানা যদি আমরা আমল করতে পারি, জীবনে ধারণ করতে পারি; তা হলে আমাদের ব্যবহারিক জীবনটা সত্যি সুন্দর হয়ে যাবে। হতে পারবো সত্যিকারেরই আদর্শ মুমিন। কিছুটা হলেও ওনাদের মতো। এতো কথার ভীড়ে হাদিসটাই তো বলা হলো না। হাদিসটা হলো ;
"
মুমিন কটুভাষী হতে পারে না, লা‘নতকারী হতে পারে না এবং অশ্লীল ও অশালীন কথা বলতে পারে না। -(জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭৭)
একটা জীবনকে খুবই দারুণভাবে পরিবর্তন করার জন্যে এই একটি হাদিসই যথেষ্ট!
ওনার গ্রন্থটির শেষ হাদিসটাও আমাদেরকে সঠিক ইলম অর্জন করতে এবং একজন আদর্শ মুমিন হতে খুব বেশিই অনুপ্রেরণা যোগায়! যার-তার কাছ থেকে জ্ঞান নেয়া দ্বীনের শিক্ষা যেনো না নিই, সেই বিষয়টির বিষয়েই সতর্ক-সচেতন করে। হাদিসটি হলো :
ইলম হলো দ্বীন। তোমরা কার কাছ থেকে দ্বীন গ্রহণ করছো তা যাচাই করে নাও।
ওনার যেই কিতাবটি, সেই কিতাবটি একাধারে যেমন সুনান তেমনি জামে-ও। ওনার এই গ্রন্থ সম্পর্কে শায়খুল ইসলাম হাফেজ ইমাম আবু ইসমাইল আবদুল্লাহ আনসারি বলেন,
আমার দৃষ্টিতে তিরমিজি শরিফ বুখারি ও মুসলিম গ্রন্থদ্বয় অপেক্ষা অধিক উত্তম ব্যবহারোপযোগী। বুখারি ও মুসলিম এমন গ্রন্থ, যার থেকে শুধু বিশেষ পারদর্শী আলিমগণ ব্যাতিরেকে অন্য কেউ ফায়দা লাভ করতে পারে না। কিন্তু ইমাম আবু ঈসা তিরমিজির গ্রন্থ থেকে যে কেউ উপকার লাভ করতে পারে।
মূলত উনি কিতাবটি সংকলনের ক্ষেত্রে ইমাম বুখারী এবং আবু দাউদের অনুসরণই বেশি করেছেন। সংকলন সমাপ্তি করলেন যখন, তখন তিনি তা বুখারা, খুরাসানসহ সকল স্থানের মুহাদ্দিস, হাদিস বিশারদের নিকট প্রেরণ করলেন। সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করলেন। এভাবে তিনি ( আমরা আশাবাদী) আল্লাহরও সন্তোষ অর্জন করে চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে। পাড়ি দিলেন পরপারে। সেদিন ছিলো রজব মাসের ১৩ তারিখ। সোমবার। স্থান ছিলো তাঁর নিজেরই জন্মভূমি তিরমিজ শহরের বূগে। হিজরি ২৭৯ হিজরি সন তখন চলমান। তাঁর বয়স হয়েছিলো সত্তর বছর তখন। সে বয়সেই ঢলে পড়লেন মৃত্যু কোলে। ইন্না-লিল্লাহি ও'ইন্না ইলাইহি রাজিউন!
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ইমাম তিরমিজির ওপর রহমের বারিধারা বর্ষণ করুন। তাঁর সকল সৎ কর্মগুলো কবুল করুন। আমীন!!
||ইমাম তিরমিজি রহিমাহুল্লাহ||
~রেদওয়ান রাওয়াহা
Comments
Post a Comment