Posts

Showing posts from October, 2022

“আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং আমাদের আবেগ তত্ত্ব”

Image
“আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং আমাদের আবেগ তত্ত্ব”   ০১. সমাজে সম্মান বলতে ওরকম কিছুই ছিলো না তাঁর । ছিলো না কোনো প্রভাব-প্রতিপত্তিও। থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, তিনি গরীব। তাঁর মা একজন দাসি। আর তিনি হলেন সেই দাসিরই সন্তান। অথচ সেই মানুষটিই ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে ফোটে আছেন। আছেন অগণিত প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য মানুষদের জন্যে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে । মক্কায় তখন আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম মানুষদেরকে ডাকতেছেন তাওহিদের দিকে। অগণিত দেব-দেবীর পুজো-অর্চনা ছেড়ে এক রবের দাসত্বের দিকে। মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের দাওয়াতের তখন একেবারে প্রাথমিক দিক, সূচনা পর্ব। তাঁর দাওয়াতে সাড়া দিয়েছেন সবে মাত্র একেবারেই হাতেগোণা কিছু লোক। সেই সংখ্যাটা হবে ৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। তাঁদের মধ্যে আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুও অন্যতম। গুটিকতক যে মানুষেরা ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আবার সবাই প্রকাশ্যে তাঁদের দ্বীন-ইসলাম গ্রহণের কথা ঘোষণা দিতে পারেনি কাফিরদের নির্মমতার ভয়ে। কিন্তু আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু জীবনের ভয়, কাফিরদের নিষ্পেষ...

প্রচলিত এই মীলাদ অনুষ্ঠান নিয়ে হাজার বছরের ওলামায়ে কেরামের অবস্থান কী?

Image
  এক ধরনের প্রচণ্ড সালাফি বিদ্বেষ থেকে অনেকে এই যে মীলাদুন্ন নবী, জশনে জুলুসের উৎসবমুখর মাহফিল ইত্যাদি বিষয়কে সেক্যুলারদের শাহবাগী বয়ানের কপি করে হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির নামে একটা বয়ান তৈরি করতেছে গত দুই বছর থেকে। এখন তাদের এহেন হাগার বশরের সংস্কৃতি নিয়ে হাজার বছরের উম্মাহর শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তী ওলামায়ে কেরাম কী বলেছেন, কী মতামত প্রদান করেছেন, আসুন একট দেখে নিই : প্রচলিত এই মীলাদ অনুষ্ঠান, যা সালফে সালিহীনের যুগে ছিল না। যদি এ কাজে কোন ফযিলত ও বরকত থাকত , তবে পূর্বসূরীরা আমাদের চাইতে বেশী হকদার ছিলেন ,কারণ তারা নবী প্রেমের ক্ষেত্রে আমাদের চাইতে অনেক অগ্রগামী এবং ভাল কাজে অধিক আগ্রহী ছিলেন। (ইকতিজা উসসিরাতিল মুস্তাকিমঃ-২৬৫) ~ শাইখ আল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. “প্রচলিত মীলাদ না কুরআন সুন্নাহর কোথাও আছে, না পূর্ববর্তী উম্মতের আদর্শ কোন ব্যক্তি থেকে প্রমাণিত। বরং তা সুস্পষ্ট বিদ‘আত, যার আবিষ্কারক হলো একদল পেটপূজারী।” (আল-হাবী লিল ফাতওয়া: ১/২২২-২২৩) ~ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী রহ. “এজাতীয় মীলাদ সর্বোত্তম তিন যুগের সালফে সালিহীনের কারো থেকে সাব্যস্ত নেই। বরং এর পরবর্তী যুগে সূচনা হয়েছে।” (সুব...

সাহাবায়ে কেরাম (রা)-এর সমতুল্য লোক দেখা যায় না কেন?

Image
  সাহাবায়ে কেরাম (রা)-এর সমতুল্য লোক দেখা যায় না কেন? -সাঈয়েদ কুতুব শহীদ পবিত্র কুরআনের বাণী আজও আমাদের নিকট অবিকৃত অবস্থায় মওজুদ রয়েছে। তাছাড়া রাসূলে করীম (সাঃ)-এর হাদীস, বস্তব কর্মজীবন সম্পর্কে তাঁর নির্দেশাবলী এবং তাঁর জীবনবৃত্তান্ত সবকিছুই আমাদের নিকট সংরক্ষিত আছে। সোনালী যুগের মুসলিম উম্মাতের সামনে কুরআনের বাণী ও রাসূল (সা)- এর শিক্ষা যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবে আমাদের নিকটও আছে। শুধু রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দৈহিক সত্তা আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই। এ কারণেই কি দুনিয়ার কোন দেশেই ইসলামী সমাজ পূর্ণাঙ্গরূপে কায়েম নেই? আল্লাহর বিধানের বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণের জন্যে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দৈহিক উপস্থিতি অপরিহার্য হলে আল্লাহ তাআলা কখনো ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে দুনিয়ার সকল মানুষের জন্যে একমাত্র দ্বীন হিসাবে অবতীর্ণ করতেন না এবং এটাকে দুনিয়াবাসীদের জন্যে সর্বশেষ প্রত্যাদিষ্ট বাণী এবং সকল কাল ও যুগোপযোগী দ্বীন বলেও ঘোষণা করতেন না। আল্লাহ তাআলা স্বয়ং পবিত্র কুরআন হেফাযদ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। কারণ, তিনি জানতেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইন্তেকালের পরও ইসলামী জীবন বিধান বাস্তবায়িত হয়ে মানব জাতির কল্যাণ সাধন...

১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের যুদ্ধাপরাধের কিছু খণ্ডচিত্র

Image
আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন কারা দেয়? এর জবাবে আপনি কী বলবেন? সচেতন না হলে ইসলামপন্থীদের কোনো না কোনো গ্রুপের দিকেই আঙুল তুলবেন। হ্যাঁ, এভাবেই মিডিয়া-সন্ত্রাসের মাধ্যেমে এসেবের দায় অনেক সময় ইসলামপন্থীদের ওপর চাপানো হয়। বিশেষত রাজনৈতিক জামায়াত এবং অরাজনৈতিক হেফাজতের ওপরেও কখনো কখনো দায় চাপানো হয়। হুবহু  ১৯৭১ সালেও এই কাণ্ডগুলো ঘটানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের নামটা অবাঙালি নাম হলেও তারা কিন্তু অবাঙালি বিহারিদের ওপর চরম বর্বরতা পরিচালানা করেছে।  তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে অবস্থানরত অসংখ্য অবাঙালি নিরিহ বিহারিদের হত্যা করেছে নাস্তিক-আধা নাস্তিক আওয়ামী লীগ-ই। আর এসব দোষ এখন যেভাবে জামায়াত-বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, তদ্রূপ '৭১-এর বিষয়টিও তেমন। আওয়ামী লীগের পাণ্ডারা সারাদেশে অস্থিতিশীল আর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে শুধু বিহারিই নয়, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদেরকে পর্যন্ত হত্যা খুন এবং ধর্ষণ করে খালবিল নদীতে ভাসিয়ে দিতো। এরপর পাকিস্তান ভেঙে পূর্ব পাকিস্তান যখন আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ভারতীয় কা.ফি.রদের তাবেদারে পরিণত হয়েছে, তখন সব দোষ গ...

"ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু মায়িন রহিমাহুল্লাহ"

Image
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস সমূহের প্রতি, নববী ইলমের রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি কতোটা ডেডিকেশন থাকলে, কতো বেশি পরিশ্রমের প্র্যাক্টিস থাকলে একজন মানুষের পক্ষে দশলক্ষ হাদিস নিজ হাতেই লিপিবদ্ধ করা যায়? হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন দশলক্ষই! রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসগুলোর শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয়ের জন্য, যথাযথভাবে উম্মাহর কাছে সংরক্ষণের জন্য ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু মায়িন এটাই করেছেন।  আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যদি কোনো ফাসিক্ব ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখো’ (হুজুরাত ৪৯/৬)। আর তাঁর মতো এমন বিদগ্ধ ইমাম কি আল্লাহর এই নির্দেশনা অমান্য করে এর বাহিরে চলতে পারেন? তাই তো তিনি এ হাদিসগুলো সংরক্ষণ করেই শুধু বসে থাকেননি, এগুলোর শুদ্ধতা যাচাই-বাছাই করার কাজও করেছেন। খুবই মনোযোগের সাথেই করেছেন। যার কারণে তাকে শুনতে হয়েছে অনেক অপবাদ আর গালাগালি। তিনি রিজালশাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়ায় (রিজাল শাস্ত্র হলো হাদিসের সনদ সম্পর্কে জ্ঞান। অর্থাৎ সনদে যে সকল বর্ণনাকারী রয়েছেন, তাঁরা নির্ভরযোগ্য কি-না, সে সম্পর্কিত বিশেষায়...

"বাংলার মওদূদী : মাওলানা আব্দুর রহিম রহিমাহুল্লাহ"

Image
মাওলানা আব্দুর রহিম রহ.। এই মানের একজন দার্শনিক আলিমে দীন বাংলার জমিনে আরেকজন পয়দা হয়নি। আমি ওনাকে বলি মাওলানা মওদূদীর রহ. বাংলা ভার্শন বা বাংলার মওদূদী।  সোজা কথায় বলতে গেলে ইমাম মওদূদীর যে কয়জন স্বার্থক উত্তরসূরী বাংলাদেশের জমিনে এবং উপমহাদেশের জমিনে সৃষ্টি হয়েছে, তাদেরমধ্যে মাওলানা আব্দুর রহিম অন্যতম। তিনি এতো অধিক শ্রম-সময় আর ঘাম দিয়েছেন আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার জন্য, যার কারণে তাঁকে বাংলার মওদূদী হিসেবে অবিহিত করাই যায়।  অনেকে হয়তো ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে এই কিংবদন্তি দা'ঈ ইলাল্লাহ ও আলিমে দীনকে অস্বীকার করবে বা করতে চাবে, কিন্তু আল্লাহর এই জমিনে আল্লাহর দীন যতদিন থাকবে, ততদিন মাওলানা আব্দুর রহিম রহিমাহুল্লাহ বেঁচে থাকবেন।  হাদিস শাস্ত্রে বাংলাদেশের যে কয়জন আলিম সর্বোচ্চ পরিমাণে খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন, তিনি তাদের অন্যতম।  তাঁকে নিয়ে এক কথায় বলতে গেলে-  তিনি দা'ঈদের দাঈ। তিনি আলিমদের আলিম। উস্তাদদের উস্তাদ।  বাংলাদেশের মানুষের মনে দীন প্রতিষ্ঠার জজবা সৃষ্টির প্রথম ও প্রধান কারিগর তিনিই।  তিনি একাধারে একজন উঁচুমাপের গবেষক আলিম ছিলেন, পাশাপাশি শক্তিশালী ...