Posts

Showing posts from December, 2022

নিয়তের বিশুদ্ধতা ও মানুষের মূল্যায়ন

Image
  খুব নিষ্ঠা আর আন্তরিকতার সাথে, ভীষণ বিনয় আর ভালোবাসার সাথে, খুব আবেগ আর উদ্দীপনার সাথে অনেকগুলো কাজ করি। যেগুলোতে দুনিয়াবী কোন চাওয়া পাওয়া থাকে না। যেগুলো খুব নির্জনে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই একেবারে নিবেদিত প্রাণ হয়ে করতে হয়। যেগুলোতে আমার দিনরাত একাকার করা পরিশ্রমের অজস্র প্রাণ বিদ্যমান থাকে। যেগুলোতে আমার মেধার সর্বোচ্চ বিনিয়োগ থাকে। যেগুলোতে আমার সুপ্ত-স্বপ্নের অজস্র ডালপালা থাকে, তবুও সেগুলো নিয়ে আমি দুনিয়াবী কোনো বিনিময় তো পাই-ই না, বরং অনেক সময় কতো কতো কাছের মানুষজনও আমার সেই পরিশ্রমের পাতাগুলো স্বাভাবিক চোখে দেখেন না বিধায় অনেক কটুকথা বলেন, অনেক অবমূল্যায়ন করেন। কেউ কেউ তো এককাঠি সরেস হয়ে অপবাদ দিতেও কুন্ঠিত হয় না। এমন নিরবিচ্ছিন্ন নিরিবিলি একনিষ্ঠ কাজের পেছনের কারিগর এই মানুষটিকেই কেউ কেউ কখনো কখনো এমন কিছু কথা বলে, এমন কিছু আচরণ করে—যে কথাগুলোর আঘাতে বুকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায়, যে আচরণগুলোর ভার বহন করাটা অনেক দুঃসাধ্য আর দুঃসহ হয়ে দাঁড়ায়। আর তখনই মন চায় সকল কাজবাজ রেখে, আড়ালের তৎপরতাগুলো রেখে আত্মমগ্ন একব্যক্তি হয়ে যাই। নিজেকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত এক অন্যরকম মানুষ হয়ে যাই, য...

"খেলাধুলা এবং আজকের তরুণ ও যুব সমাজ "

Image
যদি জিগ্যেস করা হয় আপনার আমার জীবন-উদ্দেশ্য কী? কেন এই জীবনটা পেয়েছি আমি-আপনি? কোনো সদুত্তর আছে কি? শহুরে মিডল-ক্ল্যাস ফ্যামিলির অধিকাংশের কাছেই নেই। তাদের কাছে কোনো প্যাঁচগোছ ছাড়াই জীবনের মানে হচ্ছে ভোগবাদিতা। আবার অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদ কিংবা এরচেয়ে বেটার লাইফ লীডকারী লোকজনের কাছে যা আছে, তা কেবলই জগাখিচুড়ি মার্কা কিছু এলোমেলো চিন্তার বিন্যাস। তবে আশার বিষয় হচ্ছে এই দুয়ের মধ্যবর্তী আমরা যারা আছি, সেই আমাদের অনেকের কাছেই কিন্তু জীবন-উদ্দেশ্য বলুন বা জীবনের মানে বলুন, তার সদুত্তর আছে। এখন কথা হচ্ছে যে, আমাদের যাদের কাছে এর সদুত্তর আছে, তারাও কি সেই উদ্দেশ্য-পূর্ণতায় পৌঁছানোর কাজবাজ করছি? যদি করেই থাকি, তাহলে খেলাধুলার মতো স্রেফ বিনোদনের একটা বিষয়ের পেছনে মাতালের মতো ছুটছি কেন? কেন নাটক-সিনামার জগতে নিজেকে বিভোর করে রাখছি? কেন অলস-অবধভাবে সময়টুকুকে ক্ষয়ে ক্ষয়ে নিঃশেষ করে দিচ্ছি? আমাকে যখন আমার আল্লাহ, আমার রব্ব এই দুনিয়ায় তাঁর দেওয়া হায়াত নামক নিয়ামতের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করবেন, তখন আমি কী জবাব দেবো? মূলত খেলাধুলা হচ্ছে কেবলই বিনোদন কিংবা শরীর চর্চার একটা মাধ্যম। অথচ আজ আমরা সেই খেলাকে নিয়...

"একজন জালালুদ্দিন রুমি ও আজকের মুসলমান"

Image
১ . জালাল উদ্দিন রুমির নাম শুনেনি, সম্ভবত পৃথিবীতে এমন মানুষের সংখ্যা খুব, খুব, খুবই কম। মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি নিজে যেমন একজন দ্বীনদার পরহেজগার মানুষ, তদ্রুপ তাঁর বাবাও ছিলেন অনেক বড়ো মাপের একজন আলিমে দ্বীন। এমন পরহেজগার মানুষ হবার পরেও প্রাচ্য বলেন বা পাশ্চাত্য বলেন—সবখানেই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সমানতালের, আকাশ-ছোঁয়া। সর্বত্রই রুমির সরব উপস্থিতি আজো বিদ্যমান। তবে সেই উপস্থিতিটা শাররীক নয়, সেই উপস্থিতিটা তাঁর কর্মের, চিন্তা ও চেতনার। সম্ভবত ২০০৭ সালের বিবিসির একটা রিপোর্ট-মতে স্বয়ং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিদের একজন। তাঁর লিখিত কবিতার বইপত্র আজো সর্বাধিক বিক্রি হয় সেখানে। অথচ তিনি আজ থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগে গত হয়ে গেছেন। তিনি আজকের আফগানিস্তানে ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন। আর মৃত্যুবরণ করেন ১২৭৩ সালের আজকের এই তারিখে। তথা ১৭ ডিসেম্বরে। তিনি যখনকার সময়ে ছিলেন, তখন মুসলিম দুনিয়ায় যেনো মঙ্গোলদের আগ্রাসনে কিয়ামতের বিভীষিকা নেমে এসেছিলো। মঙ্গোলদের আগ্রাসনের কারণে তাঁরা বলখ ছেড়ে চলে যান। বলখ হচ্ছে উত্তর আফগানিস্তানের একটি প্রদেশ। তাঁর মায়ে...

“অসাধারণ এক যুদ্ধজয়ের গল্প”

Image
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা পবিত্র কুরআনুল কারিমে মুমিনদেরকে সাহায্য আর বিজয় দান করার কথা বলেছেন। আল্লাহর সেই সাহায্যের বদৌলতে বিজয়ের অসংখ্য নজির ইতিহাসের পাতায় পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। সেরকমই একটি বিজয় হচ্ছে সেলজুক সম্রাট সুলতান আল্প আরসালান কর্তৃক বাইজেন্টাইন সম্রাটের বিশাল বড়ো এক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়। বাইজেন্টাইন সম্রাট রোমানস ডিয়োজেনেস মুসলমান সেলজুকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ফ্রেঞ্চ, গ্রীক, রাশানসহ দুই লাখ মতান্তরে তিন লাখ সৈন্যের বিশাল এক বাহিনী নিয়ে আনাতোলিয়া তছনছ করে আর্মেনিয়ার ভন লেকের উত্তরে মুরাট নদীর তীরবর্তী মানযিকার্ট এসে হাজির হয়।  কিন্তু সেলজিক সুলতান আল্প আরসালানের হাতে তেমন বড়ো কোনো সেনাদল ছিলো না। তিনি তাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতও ছিলো না। সেলজুক সম্রাট আল্প আরসালানের হাতে তখন মাত্র ১৫ হাজার সৈন্যের একটা বাহিনী ছিলো। তো মাত্র ১৫ হাজার সৈন্য নিয়ে কি আর এরকম একটা বিশাল পরাশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়? সুলতান আল্প আরসালান সবদিক বিবেচনায় তাই তাদেরকে সন্ধির জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করেন। কিন্তু বাইজেন্টাইন সম্রাট রোমানস ডিয়োজেনেস সুলতান আল্প আরসালানের প্রস্তাবে সাড়া না দ...

|| ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন ‘হামাস’||

Image
হামাস আরবি শব্দ। যার অর্থ হোলো আশা, উদ্দীপনা, উৎসাহ, অনুপ্রেরণা। এটা মূলত হারাকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া, ‘ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৮৭ সালে। প্রতিষ্ঠা করেন শেখ আহমেদ ইয়াসিন। খুব শিশু বয়সেই তিনি ইহুদিদের আক্রমণে পঙ্গু হয়ে যান। তবুও তিনি ফিলিস্তিনের গণ মানুষের নেতা হয়েছেন। প্রথম ইন্তিফাদার পূর্ব-অবধি এটি প্রতিরোধ আন্দোলন ছিলো না। এই সংগঠন আরবের ইখওয়ানুল মুসলিমিন আর উপমহাদেশের জামায়াতে ইসলামীরই একটি শাখা বলা যায়। তবে সরাসরি জামায়াতের শাখা না হলেও ইখওয়ানের সরাসরিই শাখা। ১৯৮৭ সালের ০৯-ই ডিসেম্বরে ইসরাঈলি বর্বর কুখ্যাত সন্ত্রাসীরা ফিলিস্তিনের তিনজন নিরিহ মানুষকে গাড়ি-চাপা দিয়ে হত্যা করে। এই অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে শুরু হয় প্রথম ইন্তিফাদা তথা জন-জাগরণ। সাধারণ মানুষের এমন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বর্ষার অঝোর ধারার বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ শুরু করে সন্ত্রাসী ইহুদি পুলিশ ও সৈন্যরা। তো সে ইন্তিফাদার মধ্যেই ইখওয়ানুল মুসলিমিনের ফিলিস্তিন শাখার সাতজন শীর্ষ নেতৃত্ব এক বৈঠকে মিলিত হন। আরবের দিকে দিকে তখনও ইখওয়ানুল মুসলিমিন একটি জনপ্রিয় আন্দোলন ও গণমানুষের...

শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা (রহঃ) : প্রেরণার পিরামিড !

Image
  ০৫-ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ । টেলিভিশন খুলতেই দেখি একটা নিরিহ মানুষ নিয়ে শাহবাগে বাম পাড়ায় চলে তুমুল হিংসাত্মক আন্দোলন। আন্দোলনের শ্লোগানগুলো আরো ভয়াবহ , আরো ঘৃণ্য। বর্বর। হিংসাত্মক।   জালিম সরকারের বিচারক নামক গোলাম রায় দিয়েছে একটা , বাম পড়ার জঘন্য আর নিকৃষ্ট ইসলামদ্রোহী নরকীটরা সেই রায়কে ফাঁসিতে রূপান্তর করার এক হিংস্রতম আবদার ও নোংরা আন্দোলনে মেতে ওঠে। সারা জাতি তখন দেখেছে যে , কীভাবে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে একটা জুলুমপূর্ণ রায়কে আরো বড়ো জুলুমে পরিণত করে একজন নিরপরাধ-নির্দোষ সজ্জন ব্যক্তিকে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশ নির্বাক। মানুষ নির্বাক। বিবেক নিস্তব্ধ। কীভাবে সম্ভব ! কীভাবে পারলো তারা ! একজন নিরিহ জলজ্যান্ত মানুষকে কথিত রাজাকার-আলবদর আর মানবতাবিরোধী অপরাধী বানিয়ে হত্যা করে তাঁর সন্তানদের এতিম ও তাঁর স্ত্রীকে বিধবা করতে ? মানুষটার চাহনিতে নিষ্পাপতার সর্বোচ্চ আভাটুকুন ফুটে আছে। দেখতে এক অদ্ভুত কিসিমের মায়া লাগে। বুদ্ধিমত্তার ও তাকওয়ার তন্ময়তা ফুটে ওঠে একসময়কার কমিউনিস্ট আজকের ইসলামে প্রত্যাবর্তনকারী শহিদ আব্দুল কাদের মোল্লা রহিমাহুল্লাহ '...