পারস্পরিক বিরোধিতা : গণতন্ত্রের অনিবার্য বাস্তবতা
গণতন্ত্রের ব্যাপারটাই এমন— এখানে একটা শত্রু পক্ষ লাগবেই। সেই শত্রুপক্ষ যত ভালো কাজই করুক, তার ভালো কাজগুলো হাইলাইট করা হবে না, বরং সেই পক্ষের নেগেটিভ দিকগুলোই মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।
অপরের দোষগুলো তুলে ধরা আর সব সময় নিজের গুণাবলিকে মানুষের সামনে ফুটিয়ে তোলাটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম প্রধান অবলম্বন।
গণতন্ত্রে যেহেতু সবাই মানুষকে কনভিন্স করেই ক্ষমতায় যেতে চায়, সেহেতু মানুষকে নিজের দলের দিকে কীভাবে নিয়ে আসা যায়, আর অন্য পক্ষ থেকে কীভাবে জনতাকে দূরে সরানো যায়; সেই চিন্তা, সেই কৌশল নিয়ে সব সময়ই ব্যস্ত থাকতে হয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে।
সুতরাং, এর আলোকে স্পষ্টভাবেই বলা যায় যে, গণতন্ত্রের স্বার্থে একদল অন্য দলের বিরোধিতা করবেই— বিশেষত যাকে সবচেয়ে বড়ো এবং বেশি প্রতিদন্ধী মনে হবে, তার ব্যাপারে এমনটা হবেই।
ইউরোপ-আমেরিকা যেহেতু বিশ্বের নিয়ন্ত্রক, সেহেতু তাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য নিজেদের মধ্যে খুনোখুনিটা খুবই কম। এই খুনোখুনির ব্যাপারটা তাদের মধ্যে যদি বেশি ঘটে, তাহলে তারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক আইন, ইত্যাদি টুলসগুলো দিয়ে বিশ্বকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাই তারা এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মজবুত বোঝাপড়া রাখে। সর্বোচ্চ সতর্ক থাকে।
কিন্তু, মুসলিম বিশ্বে এবং তৃতীয় বিশ্বে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে শত্রুতা, ঘৃণা এবং খুনোখুনি একটা বাস্তবতা। এটা হয়ে আসছে এবং হবেই।
গণতান্ত্রিক রাজনীতি করলে তৃতীয় বিশ্বের রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে এগুলো মাথায় নিয়েই রাজনীতি করতে হবে।
তবে হ্যাঁ, ইসলামের যেই পলিটিক্যাল ফিলোসোফি, সেটা যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তা হলে ঘরে ঘরে এমন শত্রুতা, দলের স্বার্থে অন্যকে অপমান করা, অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালানো, নিজ দলকে ক্ষমতায় নিতে কিংবা দলের অর্থের জোগান দিতে মানবতাবিরোধী কার্যক্রম ও খুনোখুনির ব্যাপারগুলো আর থাকবে না।
আপনি জামায়াত শিবির ও ছাত্রী সংস্থার সিলেবাসের দুটো বই— আল-কুরআনে রাষ্ট ও সরকার এবং আধুনিক যুগে ইসলামী বিপ্লবসহ এমন কিছু বইয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অসারতা ও দুর্বলতাগুলো ধরতে পারবেন।
উল্লেখ্য, আল-কুরআনে রাষ্ট্র ও সরকার বইটা লিখেছেন, বাংলাদেশে জামায়াতের প্রথম ও প্রধান প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুর রহিম রহিমাহুল্লাহ, অন্যটি লিখেছেন মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আদ্যোপান্ত জানতে আরও পড়া যায়, মাওলানা আব্দুর রহিমের ক্ষুদ্র একটি পুস্তিকা— গণতন্ত্র নক্য, চাই পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তুমুল একদেশদর্শী মনোভাব দূর করতে, ড. আহমদ আলী স্যারের গণতন্ত্র : ইসলামি দৃষ্টিকোণ বইটাও উপকারী।
~রেদওয়ান রাওয়াহা
১৫. ০৭. ২৫ ইং
Comments
Post a Comment