Posts

Showing posts from November, 2022

অন্যান্য ইসলামি প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ইমাম মওদূদীর অবস্থান এবং চিন্তাধারা কেমন ছিলো ?

Image
বিগত শতাব্দীতে মুসলমি মানসে প্রভাব বিস্তারকারী যে কয়জন প্রভাবশালী ইসলামি চিন্তক ও আলিমে দ্বীনের আগমন ঘটেছে, আল-ইমাম আল-উস্তায সাঈয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী রহিমাহুল্লাহ ছিলেন তাঁদের অন্যতম। যদিও অন্যান্য যুগের অন্যান্য ওলামাদের মতো তাঁরও কিছু ভুলচুক হয়েছে বা আছে, মানুষ হিসেবে তা থাকতেই পারে। কিন্তু দ্বীনকে খোদার জমিনে গালিব করার যে প্রবল আকাঙ্ক্ষা তাঁর ছিলো, যে অনবদ্য ভূমিকা আর প্রচেষ্টা, যে নিষ্ঠাপূর্ণ আন্তরিকতা তারঁ ছিলো, সেটা সত্যিই এক বিরল ব্যাপার। তাঁর যতোটুকুন ভুল না হয়েছে কিংবা আছে —তারচেয়ে বেশি তিনি সমালোচনার শিকার হয়েছেন। কখনো কখনো তো সেসব সমালোচনা জুলুমেও পরিণত হয়েছে। তবুও যাঁরা তাঁর প্রতি জুলুম করেছে, সমালোচনায় বাড়াবাড়ি করেছে, নির্মম আর নির্দয়ভাবে আঘাত করেছে-আক্রমণ করেছে, তিনি তাদেরকে কখনোই সেরকম আঘাত বা আক্রমণ করেননি। তাঁরা তাঁকে দূরে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু তিনি তাঁদেরকে দূরে সরাননি ৷ তিনি যা সত্য বলে মানতেন, যা দ্বীনের জন্য মঙ্গল মনে করতেন, সেসব ব্যাপারে তিনি কখনো কম্প্রোমাইজ করেননি। তিনি মুতাকাব্বির তথা অহংকারী ছিলেন না —তবে এক অগাধ আত্মমর্যদাবোধের অধিকারী ছিলেন। য...

ইসলামি আন্দোলন ও ইকামাতে দ্বীন মানে কী? ইকামাতে দ্বীনের কর্মীর কাজ কী?

Image
ইসলামি আন্দোলনের সংজ্ঞায় ইসলামি আন্দোলনের রাহবারগণ বলে থাকেন যে , ইসলামি আন্দোলন হচ্ছে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। আর ইকামাতে দ্বীনের শাব্দিক অর্থ “ দ্বীন প্রতিষ্ঠা। ” স্বাভাবিকভাবে আমরা ইকামাতে দ্বীন মানে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকেই বুঝি। সুতরাং ইকামাতে দ্বীন বলি বা ইসলামি আন্দোলন বলি , সেটার প্রায়োগিক বা পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে , “ প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে সমূলে অপসারণ করে সেখানে আল্লাহ প্রদত্ত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদর্শিত বিধানকে প্রতিষ্ঠিত করার   উদ্দেশ্যে সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা বা আন্দোলন। ” এই সেন্সকে , এই চিন্তাকে সামনে রেখে বলা যায় যে , আমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে চাই , দল না। দ্বীনের স্বার্থেই দল করি। দলের স্বার্থে দ্বীন নয় । আমরা যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে চাই এক্ষেত্রে আমরা একটা বড়োসড়ো ভুল করি , সেটা হচ্ছে আমরা আমাদের দলের কোনো ব্যক্তি , কোনো আলিম ভুল করলে সেটাকে ভুল মনে করতে রাজি না। মনে মনে ভুল মনে করলেও কিন্তু সেটাকে জায়েজ করার চেষ্টা করি। এটা সব ঘরানার ক্ষেত্রেই শতভাগ সত্য। তবে ইসলামি আন্দোলনের ভাইদের মন-মানসিকতার মধ্যে অন্যদের...

"নিজের ও অন্যের গোপনীয় পাপ প্রকাশ"

Image
আল্লাহর রাসুল কারো ব্যক্তিগত অপরাধ, গোপন পাপ অনুসন্ধান করতে বলেননি। আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা হলো এটা হারাম। রাসুল সঃ নিজেও তা করেননি। তাঁর কাছে এসে মানুষ যিনার গুনাহের স্বীকৃতি দিতো। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিতেন। তারা বলতো আমি ব্যভিচার করেছি। রাসুল (সঃ) চাইতো তাদের গোপন পাপ গোপনই থাকুক। একবার একজন এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল ! আমি যিনা করেছি। তিনি একে একে একবার না দুইবার না, চারবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি তাদেরকে বলছেন; নাহ, তুমি হয়তো স্পর্শ করেছো। সে-লোক বললেন নাহ, আমি ব্যভিচার করেছি। তখন রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন নাহ,  হয়তো  তুমি শুধু চুমো খেয়েছো। কেন এমন করেছেন আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম? তিনি এই জন্যই করেছেন যে, তিনি তথা আল্লাহর রাসুল চাইতেন মানুষের পাপ গোপন থাকুক। তারা আল্লাহর কাছে নীরবেই অনুতপ্ত হয়ে নিক। গোপনেই মাফ চেয়ে নিক। আমাদের নবী টেনে-হিঁচড়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দোষ বের করতেন না মানুষের। এখন আমরা কী করি? কারো দোষ, কারো ভুল কীভাবে পাওয়া যায় তার জন্যে মাইক্রোস্কপ যন্ত্র লাগিয়ে খুঁজি। গর্ত থেকে টেনে হিঁচড়ে অন্যের দোষ বের করি। পাপ প্রকাশ করি। কেউ কে...

খুব বেশিই অসহায় লাগছে?

Image
খুব, খুব, খুব বেশিই অসহায় লাগছে? মনটা কি ভেঙে ভেঙে খুব বেশিই চুরমার হয়ে যাচ্ছে?  পারিবারিক অশান্তি? ব্যক্তিগত জীবনের অপ্রাপ্তি? শারীরিক অস্থিরতা আর অসুস্থতায় ধুকে ধুকে জীবনটা বিষিয়ে উঠছে? সহস্র না-পাওয়া, হতাশা আর বঞ্চনা এসে তোমাকে ঘিরে ধরেছে? বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাও একদম মরে গেছে কিংবা মরে যাচ্ছে? প্রতিনিয়তই অসহনীয় আর অসহ্য লাগছে এই দুনিয়াটা? কাউকেই ভালো লাগে না?  কিছুই সহ্য হয় না? কুরআনের সেই জনপ্রিয় আয়াতটি— নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে—তো  জানো, তাই না? আসলেই তাই। এই যে তোমার এখন দুচোখ বেয়ে অবিরত জল ঝরে। রাত বিরেতে কান্না আসে। দুচোখের পাতায় আগের মতো নির্মল আর প্রশান্তির ঘুম নেমে আসে না। মনের মধ্যেও আসেনা এক চটাক শান্তি আর স্বস্তিও। শরীরটাও খুব বেশি ভালো যাচ্ছে না। বিশ্বাস করো, এসব বেশিদিন থাকবেনা। একদিন সত্যিই তুমি আবারও আগের মতো হাসতে পারবে। গাইতে পারবে। খাইতে পারবে। পড়তে পারবে। খেলতে পারবে। পাখির কুহতান, নদীর কলতান— ইত্যাদি সবকিছুতেই তুমি বিমুগ্ধ হবে। প্রশান্তির পরশে তোমার দেহ-মন ঝরঝরে সতেজ হবে।  এই যে আজকে অসুস্থতার আঘাতে তুমি যে মুষড়ে পড়ে আছো, তোমার কলিজার ভেত...

"আমরা যে কাজগুলো করি আর নিজের অজান্তেই ঈমানের শেষ সীমানা অতিক্রম করি"

Image
  সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ একজন হারাম রিলেশনের স্ট্যাটাস দিয়েছে,  আপনি সেটা দেখে অভিনন্দন জানিয়ে বসে আছেন। অথচ কোনো হারাম রিলেশনে অভিনন্দন জানানো মানে সেই হারাম কাজকে প্রকাশ্যে প্রমোট করছেন। হারামের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করছেন। অনেকেই হাটুর ওপর হাফপ্যান্ট  পরা পিকচার আপলোড করে ফেসবুকে। আপনি সেখানে রিয়েক্ট করা মানে আপনি সেই ব্যক্তির গুনাহকে সমর্থন জানাচ্ছেন। মিউজিক হারাম।  এবং মাওলানা মওদূদী রহিমাহুল্লাহও এটাকে হারাম বলে অভিমত দিয়েছেন। কোনো যুক্তি ছাড়াই। এখন হারাম মিউজিক যুক্ত কোনো গানে রিয়েক্ট করা মানে আপনি সেই হারামকে এবং গুনাহকে ডিমোরালাইজ করার পরিবর্তে সোৎসাহ ও সাগ্রহে সেটার পক্ষে কাজ করছেন। এটা থেকে ফেরাবার প্রচেষ্টার বদলে আপনি এই নিন্দনীয় কাজে উৎসাহ যোগাচ্ছেন। এভাবে একজন বেপর্দা নারীর পিকচারে রিয়েক্ট দেওয়া মানে আপনি তাকে সেই বেপর্দার দিকে উৎসাহ দিচ্ছেন। কিংবা বোরকা পরিহিত অবস্থায়ও টানাটানা চোখ, অপরূপ সৌন্দর্য্যের মায়াবী চাহনিযুক্ত পিকচারে আপনি তন্ময় হয়ে কেয়ার রিয়েক্ট বা লাভ রিয়েক্ট করা মানে আপনি সেই নিন্দনীয় কাজে ভীষণ উৎসাহ দিচ্ছেন। শুধু উপর্যুক্ত কয়েকটি বিষয়ই না, এর...

"বিয়ে ও বাস্তবতা "

Image
বিয়ে নিয়ে কিছু ভাইবোন এমনভাবে এমন কিছু  আলাপ আলোচনা তোলে, মনে হয়—বিয়ে করলেই কোনো মানুষ পূর্ণরূপে শুদ্ধ হয়ে যাবে। বিয়ে করলেই বুযুর্গ কিংবা ওলী-আল্লাহ হয়ে যাবে, তার চরিত্র থেকে ফুলের ঘ্রাণ কিংবা মধুর স্বাদ উপচে উপচে পড়বে। সে-ব্যক্তি সাঈয়ুদুনা ইউসুফ আলাইহিস সালামের মতো ফুলেল ও নিষ্পাপ-নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী হয়ে যাবে বা উক্ত ব্যক্তি জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকামে পৌঁছে যাবে!অথচ মোটের ওপর বিষয়টা আসলে অতোটা সরল নয়। তার মানে কি চরিত্র সংরক্ষণে বিয়ের গুরুত্ব নেই? অবশ্যই আছে। নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য, একটা পবিত্র বন্ধনের জন্য বিয়ের বিকল্প অবশ্যই নেই। বিয়ে নিঃসন্দেহে চরিত্র-শুদ্ধ রাখার সেরা একটা মাধ্যম ! কিন্তু যেভাবে বিয়ে নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে, বিয়ে নিয়ে ফ্যান্টাসি-মূলক লেখাজোখা হচ্ছে, সেগুলো দেখলে মনে হয়  বিয়ে করলেই দো-জাহানের অশেষ ও অসীম নেকি হাসিল করে এরপর তরতর করে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান দুনিয়ায় থাকতেই হয়ে যাবে! বিষয়টি কি আসোলই তাই? অবশ্যই না! এই যে ধরুন পরকীয়া, এই পরকীয়া কি অবিবাহিতরা করে? করে তো তারাই, যে বা যারা বিয়ে করেছে, যার স্ত্রী আছে স্বামী আছে কিংবা কারো একাধিক প্রাপ্ত ...

একজন মুসলিমের রাজনীতি কেমন হবে?

Image
ইসলামী আন্দোলন সমূহের টার্গেট ও কর্মপদ্ধতি যেটা, সেটা নিয়ে আজকে কেউ কেউ বুঝে হোক বা না বুঝে হোক— কিছু সমালোচনা করেন। মূলত ইসলামি আন্দোলনকৃত দল বা সংগঠন-সমূহের মূল টার্গেট জীবনের সব বিষয়-আশয় দ্বীনের আলোকে গঠন-পরিগঠন করা। এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন করা। মানে সোজা কথায় আল্লাহর সন্তোষ অর্জনই মূল বিষয়। এটা তাঁদের সাংবিধানিক এবং সাংগঠনিক ঘোষণা। পুরোটা জীবনের ভেতর সাংস্কৃতিক বিষয় আছে, সামাজিক বিষয় আছে। আছে রাজনীতিও। সে হিসেবে তারা সেসবেও অংশগ্রহন করে। সেসব কার্যক্রম পরিচালনা করে। যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা দখল করা তাঁদের লক্ষ্য নয়। কিংবা এমপি-মন্ত্রী বা নেতা হওয়াও তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। তাঁরা সামগ্রিক। তাই তাঁদের কার্যক্রমও সামগ্রিক। এখন যে ইসলামী আন্দোলন বুঝেছে, সে কখনোই ক্ষমতার রাজনীতিতে ইসলামী দলগুলো কেন সফল নয়, কেন তারা বাংলার এরদোয়ান কিংবা একেপি হয়ে ওঠতে পারেনি বা পারেনা, এই হতাশায় তাঁদের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানিয়ে সমালোচনা করবে না। সমালোচনাকারীদের কেউ কেউ ইসলামি সংগঠনগুলোকে নসীহা পেশ করে যে, রাজনীতি করতে হবে রাজনীতির ভাষায়। জনতার ভাষায়। কিংবা গণমানুষের ভাষায়। এই টাইপের কিছু মুখরোচক পপুলা...