পাঠ্যপুস্তকে শকুনের থাবা






 শিক্ষা। মানুষের আত্মপরিচয় বিনির্মাণের প্রাথমিক পদক্ষেপ। মানুষ যদি সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, তাহলে সে তার আত্মপরিচয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে গড়ে উঠতে পারবে। যদি ভুল শিক্ষা গ্রহণ করে, তাহলে সে ভুল মানুষ হিসেবেই গড়ে উঠবে। এ কারণেই আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করার সময় সর্বপ্রথম তাকে তার স্রষ্টার ব্যাপারে জ্ঞান দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত জীবন ব্যবস্থার মূল গাইডলাইন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনেও সর্বপ্রথম যে আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে, সেটা হচ্ছে শিক্ষাসংক্রান্ত আয়াত।


এই পৃথিবীতে ৪২০০+ ধর্ম আছে, একমাত্র ইসলামই তার প্রথম বাণীটাই শুরু করেছে শিক্ষা দিয়ে। আর এই শিক্ষাটা কেমন হবে, সেটাও কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,
"পড়ো তোমার প্রভুর নামে। যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।"


এখন, যে মহান আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি তাঁকেই জানতে না পারে, তাঁর মহত্ব অনুধাবন করতে না পারে, তাহলে তো তার দ্বারা একজন সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠা সম্ভব নয়।

এরপর আমরা যদি আমাদের বীরদের, আমাদের ইতিহাসের মহান নায়কদের, আমাদের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির স্বরূপ আমাদের শিক্ষার্থীদের জানাতে না পারি, শেখাতে না পারি; তাহলে তো তারা নিজেদের সত্যিকারের আত্মপরিচয় নিয়ে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে বড়ো হবে না। তারা আত্মপরিচয়হীন এক বিপথগামী মানুষ হিসেবেই গড়ে উঠবে।

আর বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের নতুন প্রজন্মকে এরকম বিপথগামী মানুষ হিসেবে তৈরি করার আয়োজনই করেছে। এমতাবস্থায় আমাদের কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থীদের সত্যিকারের মুসলিম, সচেতন মানুষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের বিকল্প নেই। আচ্ছা, আগে দেখে আসি এবারের পাঠ্যপুস্তক আমাদের শিক্ষার্থীদের কী শেখাচ্ছে।


০১-"একজন শিক্ষার্থীকে তার মূল আত্মপরিচয়কে ভুলিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে"

বর্তমান পাঠ্যবইতে রুমানার অনেকগুলো পরিচয় সামনে আনা হয়েছে। তার ধর্মীয় পরিচয়কে গৌন বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন কিছু তার পরিচয় হিসেবে সামনে আনা হয়েছে, যেগুলো একজন মুসলিম শিক্ষার্থীর জীবনাচরণ এবং মূল্যবোধের সাথে যায় না।

পাশাপাশি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি পাঠ্যপুস্তকে শেখ হাসিনা কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থীদের তার নিজ পিতার বন্দনা করার মনমানসিকতা তৈরির ব্যবস্থা করেছে।

এই ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য রচিত। এখানে ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান শেখানোর নামে মুজিব বন্দনাও শেখানো হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজনীতির কী বুঝে? সে নেলসন ম্যান্ডেলার সম্পর্কে কী জানে?

একজন মুসলিম শিক্ষার্থী জন্মলগ্ন থেকেই তো তার রাসূল (সা.)-কে নিজের জন্য আদর্শ-অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করে। কিন্তু সেখানে তার আত্মপরিচয়ের মধ্যে ইসলামের কোনো ছিটেফোঁটা নেই। জনগণের ট্যাক্সের বইয়ের মাধ্যমে মুজিবকে প্রিয় রাজনীতিক বানালেও প্রিয় ব্যক্তি হিসেবে নবীজিকে আনা হয়নি। একজন মুসলিমকে খাটি সেকুলার বানানোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা লক্ষণীয় এই বইতে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় জনগণের মূল্যবোধ বিরোধী এমন পাঠ্যপুস্তক চলতে পারে না। এই পাঠ্যপুস্তকে ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধহীন আত্মপরিচয় বিনির্মানের দুঃসাহসিক অপচেষ্টা করা হয়েছে। এটাকে রুখে দিতে না পারলে বাংলার মুসলিমদের কপালে দুর্গতি আছে।




০২-"মুসলিম বীরদের ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন"

একটা বিষয় বলুন তো, ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজিকে আপনি কী হিসেবে চিনেন? তাঁর বীরত্বের গল্পগুলো আপনাকে অসীম সাহসের সাথে সত্য-ন্যায়-ইনসাফের পথে চলতে উদ্দীপনা যোগায় না? আমার- আপনার কাছে তিনি একজন সুপার হিরো না?

হ্যাঁ, আপনার সেই সুপার হিরোকেই বর্তমান তাহাজ্জুদগুজারী হাসিনা সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা কার্যক্রম উচ্চভিলাষী, দস্যু, দখলদার ইত্যাদি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এজেন্ডা হাতে নিয়েছে।

আমরা-আপনারা উপমহাদেশের মানুষের মহান ত্রাতা এই বীর বিক্রম ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজিকে যেভাবে চিনেছি, যেভাবে জেনেছি; নতুন প্রজন্ম ঠিক সেভাবে ওনাকে জানবেনা।

এরা নিজেরা ইসলাম কোপানোর অপকর্মে সুবিধা করতে না পেরে মুসলমানদের সন্তানদের দিয়ে ভবিষ্যতে ইসলাম কোপানোর নীল-নকশাকে বাস্তবায়ন করার পৈশাচিক উদ্দেশ্যে উপমহাদেশের মানুষদের ত্রাণকর্তা ন্যায়-ইনসাফের মূর্তপ্রতীক বীর মুজাহিদ ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। কৌশলে উচ্চাভিলাষী, দস্যু, দখলদার ইত্যাদি অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ মানবতাবিরোধী ফিরিঙ্গিদের প্রতি মুগ্ধতা ছড়ানো হয়েছে।

চিন্তা করুন, ৮৮-৯০% মুসলমানদের এইদেশে রাষ্ট্র-শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় বা রাষ্ট্র-শক্তির আয়োজনে এভাবেই আমাদের মুজাহিদদেরকে, আমাদের সুপার হিরোদেরকে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে ! এভাবেই কি চলতে থাকবে? আমাদের কি কিছুই করার নেই? এভাবেই চলতে থাকবে সব? চলতেই থাকবে? দীনের সকল উপায়-উপাদান ও নিদর্শনকে রাষ্ট্র কর্তৃক নিঃশেষ করা হচ্ছে!  والله المستعان علىٰ ما تصيفون !!



উল্লেখিত স্ক্রিনশটটি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের তিন নাম্বার পৃষ্ঠা।


০৩-‘আল্লাহ কর্তৃক ফরজকৃত-হিজাবের বিধানকে’ খাটো করার অপপ্রয়াস'


সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-অনুশীলন বই’ এর ১২২ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত
‘অবরোধবাসিনীর কাহিনী’ নামক গল্পগুলোয় বোরকাপরা নারীদের অপমান। একটা কাহিনি এনেছে। এরপর আমাদের পর্দানশীন মা-বোনদেরকে আসবাবপত্রের সাথে তুলনা। কর্মচারী কর্তৃক বোরকাপরিহীতা নারীদের লাথি দেওয়ার আজগুবি গপ্পো এবং তারচেয়েও আজগুবি গপ্পো হচ্ছে তারা নাকি লাত্থি খেয়েও কিছু বলেনি!

এরপর আরেকটি গল্প এনেছে। সেখানে বলা হয়েছে- ‘এক বাড়িতে আগুন লেগেছে। গৃহিণী বুদ্ধি করে তাড়াতাড়ি সব গয়না একটা বাক্সে ভরে ঘরের বাইরে বের হলেন। দরোজায় এসে দেখলেন একদল পুরুষ আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। তিনি তাদের সামনে বের না হয়ে আবার ঘরের ভেতরে গিয়ে খাটের নিচে বসলেন। সেই অবস্থায় পুঁড়ে মরলেন। তবুও পুরুষের সামনে বের হলেন না।’ এভাবেই পরিপূর্ণ শরীয়ত মেনে পর্দা করা মা-বোনকে অপমান করা হয়েছে। উপস্থাপন করা হয়েছে নির্বোধ হিসেবে।
=

=


০৪-'নবীর (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম) সুন্নত দাড়ি এবং নবী-প্রেমিক দাড়িওয়ালাদের অপমান'

ভাবতে পারেন, আমাদের পূর্ব-পুরুষ ইসলামি জীবনধারায় বিশ্বাসী। তাঁরা ইসলামকে ভালোবেসেছে। দাড়ি রেখেছে। কিন্তু এখন আমাদের নতুন প্রজন্মের মানসে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটা চিহ্ন, 'দাড়ির' প্রতি নেগেটিভ মনোভাব তৈরি করা হচ্ছে।

ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ের ১৭ পৃষ্ঠায় দাড়িকে বোকা আর হাদারাম মানুষের চিহ্ন বলে দাড়ি এবং দাড়িওয়ালা দীনদার মানুষদেরকে অপমান করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।





০৫-"উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে"


হিন্দুদের আশরাফ-আতরাফ, জাতপাত ইত্যাদির পার্থক্য মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইসলামে সম্মান ও মর্যাদার, আভিজাত্য আর শ্রেষ্ঠত্ব কেবলই তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়। এখানে দাস বেলাল (রা.) হয় ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মুয়াজ্জিন। এখানে শহীদের মর্যদাও পায় একজন দাসী এবং নারী। আবার কুরআনও আমাদেরকে জানাচ্ছে - '
আল্লাহর কাছে তারাই সবচেয়ে সম্মানিত, যারা অধিক তাকওয়াবান।'

এই যে ইসলামের এই মহান শিক্ষা, ইসলামের এই মহান শিক্ষাকে উপেক্ষা করে হিন্দুদের আশরাফ আতরাফ, জাতপাতের বিভেদ-বিরোধ মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে শাহবাগীদের রচিত এবারের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান নামক পাঠ্যপুস্তকের ১১৫ পৃষ্ঠায়।





০৬-"শি'আরে ইসলাম তথা ইসলামের নিদর্শনকে মুছে ফেলা হয়েছে"

শকুনেরা কেবল স্কুলের পাঠ্যপুস্তক নিয়েই ষড়যন্ত্র করে থেমে থাকেনি। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের মাদরাসার পাঠ্যপুস্তক থেকেও ইসলামি নিদর্শনকে মুছে ফেলার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। মাদরাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে হিজাব, মাথায় টুপি এবং সম্ভাষণ হিসেবে রাসুলের (সা.) শিখিয়ে দেওয়া সর্বোত্তম সম্ভাষণ সালামকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আনা হয়েছে ইংরেজদের সম্ভাষণ। [ মাদরাসার প্রথম শ্রেণির পূর্বের বই এবং এ বছরের বই মিলিয়ে দেখে নিতে পারেন] প্রশ্ন হচ্ছে, এসব কাকে খুশি করার জন্যে করা হয়েছে এবং হচ্ছে?





০৭-"বিজ্ঞানের নামে পৌত্তলিকতার প্রতি মুগ্ধতা "

বিজ্ঞান কি পৌত্তলিকতাকে বিন্দুমাত্রও সমর্থন করে? কিংবা বিজ্ঞান আর পৌত্তলিক মিথ কি এক জিনিস? পাঠ্যবই বলুন, সাহিত্যের বই বলুন, সেসব বইতে মুসলিম সন্তানদের দ্বারা ভবিষ্যতে ইসলাম কোপানোর জন্য ইসলামকে উপেক্ষা করে পাঠদান করা হলেও, কিন্তু পৌত্তলিকতাকে উপেক্ষা করা হয়নি। সমাজবিজ্ঞান বা সাধারণ বিজ্ঞান, ইত্যাদি সবকিছুতেই কোনো না কোনোভাবে বিজ্ঞানের নাম দিয়ে বিতর্কিত ডারউইনবাদ পড়ানো হয়, যেনো মুসলিম সন্তানদেরকে সংশয়ী কিংবা মুরতাদ হিসেবে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু অন্যদিকে পৌত্তলিকতা, ব্রাহ্মণ্যবাদ ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি মুগ্ধতা তৈরি করা হচ্ছে।

এই বইটি ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন বই। এই বইয়ে বিজ্ঞান শেখানোর কথা থাকলেও এর মাধ্যমে একটা অবৈজ্ঞানিক পৌত্তলিক মিথ শেখানো হচ্ছে। এই গল্পটি দেখলে আপনার মনে হতে পারে বইটি হয়তো হিন্দুধর্মের কোনো ধর্মীয় বই। কিংবা গল্পে গল্পে দেবতাদের শক্তি-ক্ষমতা বর্ণনা দেওয়ার কোনো বই। কিন্তু না, এটি বিজ্ঞান বই। আর দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ট্যাক্সের টাকায় প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে বিজ্ঞানের নামে এভাবেই পৌত্তলিকতার প্রতি মুগ্ধতা ছড়ানো হচ্ছে। দেবদেবীর বন্দনা করা হচ্ছে।




০৮-"মানবতা-বিধ্বংসী সৃষ্টির বিকৃতি হারাম ট্রান্সজেন্ডারকে স্বাভাবিক করার হীনপ্রচেষ্টা" 


হিজড়াদের প্রতি সচেতন ও শিক্ষিত মানুষের সহানুভূতি থাকে। মানুষের সেই সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ট্রান্সজেন্ডারকে এবং সমাকামিতাকে শিক্ষার্থীদের কোমল মনে ঢুকিয়ে দেওয়ার নিকৃষ্ট কাজ করা হচ্ছে। অথচ হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডার এক বিষয় নয় ।

হিজড়া। আল্লাহর সৃষ্টি। ইসলাম তাদেরকে সম্মানজনক, স্বাভাবিক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকার দিয়েছে। তাদের প্রতি ইসলাম সহানুভূতিও প্রদর্শন করে। তারা ইসলাম প্রদত্ত মৌলিক সব অধিকার পাবে। কিন্তু ছেলে হিসেবে জন্ম নিয়েও নিজেকে মনে মনে মেয়ে ভাবা, কিংবা মেয়ে হিসেবে জন্মগ্রহণ করার পরেও নিজেকে মনে মনে ছেলে ভাবা অত:পর সার্জারি করে মেয়ে বনে যাওয়া কিংবা ছেলে বনে যাওয়া আল্লাহর সৃষ্টির বিকৃতি। যেটাকে ট্রান্সজেন্ডার বলা হচ্ছে। এটি মারাত্মক গুনাহ। হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডার কস্মিনকালেও এক নয়। অথচ পাঠ্য-পুস্তকের মাধ্যমে এই ভয়ংকর অপশিক্ষাটা তথা ট্রান্সজেন্ডারকে স্বাভাবিকীকরণের শিক্ষাটাই আমাদের শিশুদেরকে দেওয়া হচ্ছে। এবং কৌশলে তামাম মানব সভ্যতা বিধ্বংসী, সমাজ বিধ্বংসী, ঘৃণিত সমাকামিতাকেও প্রমোট করার অভিযোগ রয়েছে এই পাঠ্যক্রমে।

একটুখানি ভেবে দেখুন, আপনার সন্তান বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার এই বই পড়ে শিখবে যে, সে আসলে পুরুষ / মহিলা না। সে মনে মনে একজন মেয়ে / ছেলে।

যেহেতু সে আকৃতিতে ছেলে আর মনে মনে মেয়ে, তাই সে ইচ্ছে করলে সার্জারির মাধ্যমে যখন-তখন নিজেকে ছেলে থেকে মেয়ে কিংবা মেয়ে থেকে ছেলেতে পরিবর্তনে করে ফেলতে পারবে। এই বিকৃতি আর অসুস্থতাকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত বলে রাখি, লিঙ্গ পরিবর্তন = আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃতি। এটা হারাম।

অন্যদিকে, হিজড়া = আল্লাহর সৃষ্টি। তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা সাওয়াবেরই কাজ। ছেলে নিজেকে মেয়ে মনে করা = মানসিক বিকৃতি। মানসিক বিকৃতিকে স্বীকৃতি প্রদান করা এবং হিজড়াদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এক নয়।





০৯-"পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে স্বীকৃত, নিন্দিত ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক এবং হিন্দুত্ববাদী অমুসলিমদের দ্বারা"


বাংলাদেশের ৮৮% মানুষ মুসলিম। তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ও রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসে। ইসলাম তাদের হৃদয়ের পরতে পরতে আসন পেতে রয়েছে। এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ ও আলিমদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অথচ মুসলমানের সন্তানদের জন্য রচিত পাঠ্যপুস্তকে কোনো আলিম ও ইসলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো আলিমদের উপস্থিতি তো নেই-ই, উল্টো ইসলাম বিদ্বেষী গোষ্ঠীর রমরমা রাজত্ব রয়েছে।

পাঠ্যপুস্তক রচয়িতারা হচ্ছে : সমকামি প্রমোটার পারভীন জলি, নাস্তিক জাফর ইকবাল, হিন্দুত্ববাদী দেবাশীষ কুণ্ড, সন্তোষ কুমার ঢালি ও স্বাধীন সেনদের মতো অধ্যাপকেরা।


Comments

Popular posts from this blog

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ের অপপ্রয়োগ

‘বিয়ে ও ডিমান্ড’