Posts

Showing posts from March, 2023

“গোপন পাপ গোপনই রাখুন”

Image
ভুল-শুদ্ধ, পাপ-পূণ্য, ন্যায়-অন্যায় মিলিয়েই মানুষ। মানুষ ভুল করবেই। ভুল করাটাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। প্রথম মানব আদম আলাইহিসসালাম থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব কজন মানুষের দ্বারাই ভুলচুক হয়েছে। পাপের পথে জীবনে কখনো না কখনো সব মানুষেরই পা গিয়েছে। মানুষকে আল্লাহ ইচ্ছের স্বাধীনতা দিয়েছেন। সেই স্বাধীনতা দিয়ে মানুষ পাপের পথে গিয়েছে, যায়; যায় পুণ্যের পথেও। মানুষকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন ইচ্ছের যে স্বাধীনতা দিয়েছেন, ফেরেশতাদের তা দেননি বা ফেরেশতাদের ইচ্ছের সেই স্বাধীনতাটুকুন নেই। মানুষের সাথে ফেরেশতার পার্থক্য কেবল এটুকুই। আবার মানুষের সাথে ইবলিশেরও একটি মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। সেটা হচ্ছে —পাপের পর, ভুলের পর অনুতপ্ত হওয়া। রব্বুল আলামিনের দরবারে নতশিরে ক্ষমাপ্রার্থনা করা। ইবলিশ ভুল করে না, সে জেনে-বুঝেই অন্যায় করে। পাপের পাহাড় গড়ে। ভুল আর অন্যায়ের মধ্যে একটা সুক্ষ্ম পার্থক্য আছে। ইবলিশ ইচ্ছে করেই আল্লাহর আদেশ অহংকার বশত অমান্য করেছে, এখনো করে যাচ্ছে। তার কৃত অন্যায়ের পরে সে অনুতপ্ত হয়নি। বরং সে নিজের অন্যায়ের পক্ষে আল্লাহর সামনে একটি ব্যাখ্যা ও যুক্তি দাঁড় করায়। সেই থেকে যে তা...

“আজানের শহিদ-খ্যাত প্রধানমন্ত্রী যিনি”

Image
  ০১. নাম তাঁর আলি আদনান এরতেকিন মেন্দারেস। বিশ্বে তিনি আদনান মেন্দারেস নামেই অধিক পরিচিত। তাঁর বাবার নাম ইব্রাহিম এতহেম এবং মায়ের নাম তেউফিক হানিমি। তাঁর দাদা ছিলেন ইউক্রেনের ক্রিমিয়ার বাসিন্দা। সেখান থেকে আসেন তুর্কীর আইদিন প্রদেশে। সেই সূত্রেই তিনি জন্মেছেন তুরস্কের আইদিন প্রদেশে। তাঁর জন্ম সাল ছিলো ১৮৯৯। সর্বপ্রথম তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি হয় ১৯৩০ সালে। অখ্যাত একটি দলের মাধ্যমে। সেই দলটি ছেড়ে তিনি পরের বছরই যোগদান করেন কুখ্যাত মুরতাদ-কিং কামাল পাশার ইসলাম বিদ্বেষী দল সিএইচপিতে । উক্ত দল থেকেই টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালে এই কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী সেকুলার দলটি ত্যাগ করেন আদনান মেন্দারেস। আরো তিনজন ত্যাগ করেন উক্ত দল। মোট তাঁরা চারজন। এই চারজনই পরবর্তীতে গড়ে তোলেন সেকুলারনদ্ধতামুক্ত, একটু উদার, ডানপন্থী একটি দল। দলের নাম ডেমোক্রেটিক পার্টি। ১৯৪৬ সালে তুরস্কে আসে নির্বাচনের মওসুম। সেই নির্বাচনে আলি আদনান এরতেকিন মেন্দারেস পুনরায় নির্বাচিত হন। নবগঠিত তাঁর সেই দল নির্বাচনে পায় ৬৪-টি আসন। ১৯৫০ সালে তুরস্কে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে আলি আ...

||সুরের তরঙ্গ||

Image
গানের প্রতি, মিউজিকের প্রতি আসক্তি কখনোই ছিলো না। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মনে হতো বাদ্যযন্ত্রের উন্মাদনা। অনেক পাপের ভিড়েও আল্লাহর কোনো এক বিশেষ অনুগ্রহে এই পাপ থেকে নিজেকে রেখেছি বিমুক্ত। তবে পাপ হিশেবে জানার আগ থেকেই, মানে পিচ্চিকাল থেকেই সেই আসক্তি হতে, বাদ্যযন্ত্র বাজানো গানের ওপর রাজ্যের অনীহা জমে আছে ! জীবনে আগত যৌবনের উত্তাল তরঙ্গের বড্ড একটা সময়জুড়ে মালাইকা কিসিমে’র জীবন পার করেছি। ইবলিস থাকে মানুষের শিরায় শিরায়। রক্ত কণিকায়। প্রতিটা ধমনীতে চলে তার ওয়াসওয়াসা! তাই হঠাৎ নেক সুরাতে শাইত্বনের ধোঁকায় নিপতিত হয়ে জীবনের পবিত্র প্রাণবন্ততা যেনো খুইয়ে ফেলছি। উন্মাতাল আনন্দের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে বেড়াই। সাময়িক সে-ই আনন্দে নিবিড়ভাবে নিবিষ্ট হয়ে পড়ি। পরক্ষণেই আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছুটে চলে বিবেক, আঘাত হানে আমাকে বিবেকের বেয়নেট! আমি আমার পূর্ব জীবনের পবিত্রতার আবরণ পেতে উদগ্রীব হয়ে পড়ি! তবে হেরে যাই। এভাবে বারবার নাফসের দাসত্বের বেড়ি পরে সে-ই নাফসের উন্মাদনায় হারিয়ে ফেলি নিজেকে। বারবার নিজের ঈমানী ইমারাতে ভয়াল ধ্বস নামে। হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে আসে। নিজেকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। হতাশা যেনো আষ্টেপৃষ্টে ধরে। হত...

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

Image
০১. আমাদের কোনো কোনো দীনি ভাই বলেন বা বলতে চান যে, আমাদের শবে বরাত জৌলুশ হারানোর কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আমাদের পতন হয়েছে। আমরা আত্মপরিচয় বিস্মৃত হয়ে পড়েছি। এক্ষেত্রে আমার কিছু কথা আছে। সেটা হচ্ছে, আমাদের শবে বরাত তো ঈদানীংই জৌলুশ হারিয়েছে। কিন্তু যখন উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে আমাদের শবে বরাত পালিত হতো, তখন আমরা কী অর্জন করতে পেরেছি? আমাদের অর্জনের খাতায় কতোটুকুনই-বা যুক্ত হয়েছিলো?  বৃটিশদের গোলামির পূর্বেও তো এটা ভীষণ উদ্দীপনার সাথে পালিত হতো। বৃটিশদের থেকে আজাদির পরেও হতো। অথচ খাইরুল কুরুন তথা সর্বশ্রেষ্ট প্রজন্ম— আসহাবে রাসুলগণের সময় তো উৎসবের নামে এমন কিছু পালন ও লালন হতো না। কিন্তু দেখুন, তখন দিকে দিকে কী দারুণভাবেই না আমাদের বিজয় কেতন উড়েছে। কতো অল্প সময়ের মধ্যেই-না অর্ধ্ব পৃথিবী আমাদের করতলগত হয়েছে।  অথচ এমন কথিত সাংস্কৃতিক উৎসব ছাড়াই আমরা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আর এদিকে আমাদের হাত থেকে যখন আমাদের সর্বশেষ অংশটুকুনও চলে গিয়েছে, মানে আমরা যখন খিলাফতের সর্বশেষ অংশটুকুনও যখন হারিয়েছি; তখনও কিন্তু আমরা এই জৌলুশময় উৎসব পালন করতাম। এই যে শবে বরাতের জৌলুশ হারিয়ে যাওয়া নিয়ে একশ্রে...

|||আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু|||

Image
  আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা। কতো পরিচয়েই না পরিচিত তিনি। তিনি ছিলেন শায়িরুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবি ও  ব্যক্তিগত কাতিব। তিনি আকাবার প্রথম শপথের ছয় জনের একজন ছিলেন। আকাবার তৃতীয় শপথের ৭০ জনের সাথে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বনু আল-হারিসার দায়িত্বশীল মনোনীত হন এবং মদিনায় ইসলাম প্রসার-প্রচারকার্য পরিচালনা করেন। রাসুলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিকদাদ ইবন আসওয়াদ আল-কিন্দীর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) সাথে তাঁর ভ্রাতৃসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে দেন।  আবার তিনি ছিলেন মুত'আর যুদ্ধের গর্বিত তিনজন শহীদ সেনাপতির অন্যতম। জিহাদের ময়দানে মুজাহিদদের নেতৃত্ব দিয়ে কুফফারদের সঙে সম্মুখ-সমরে লড়াই করতে করতে শাহদাতের অমীয় সুধা পান করে ফিরদৌসের সবুজ আঙিনায় গিয়ে হাজির হন। নবিজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসার টানে তিনি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ 'লাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিন মদিনায় আগমন করেন, সেদিন তিনি  তাঁর  গোত্রের লোকজনকে নিয়ে নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উটের পথে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান...