||মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ রাহিমাহুল্লাহ||

 





ইরানের খুরাসানে অবস্থিত নিশাপুরকে বাবুল মাশরিক্ক(প্রাচ্যদ্বার) বলা হতো। ইতিহাসের পাতায় তার সুনাম-সুখ্যাতি জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। ফুল-ফলে সুশোভিত-সুরভিত এই নিশাপুর নামক নগরী। শিক্ষা, ব্যাবসা-বাণিজ্য, কুটিরশিল্প ইত্যাদিতে সেই নগরী ছিলো ভরপুর-প্রাচুর্যময়! তৎকালীন সময়ের অন্যতম একটা সেরা নগরী ছিলো নিশাপুর। কোনদিকে ছিলো না তার প্রাচুর্যের প্রখরতা! বিস্তৃর্ণ জমিনে তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য যেনো ঠিকরে ঠিকরে পড়তো। এই নগরীর প্রসিদ্ধি, প্রাচুর্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চারদিকে হতো বিচ্ছুরিত।

 

তৎকালীন সময়ের শিক্ষা ও প্রগতিশীল সভ্যতার পাদপিঠ এমন এক ঐশ্বর্যময় নগরীর বুকেই হাজ্জাজ নির্ভেজাল আরব বংশজাত একজন বিদগ্ধ মনীষীর ঔরসে ২০৬ হিজরীর ৮২১ সনে (কারো কারো মতে ২০৪ হিজরীও হতে পারে) জন্ম নিয়েছেন হাদিস শাস্ত্রের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ তারকা। এই মহান তারকা জন্ম নিয়েছেন যেদিন সেদিন-ই ইসলামি জগতের আরেক আলোড়ন তৈরিকারী, শাফেঈ মাজহাবের প্রবক্তা শায়খ-আল ইসলাম ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইদরিছ (আল-শাফিঈ রাহিমাহুল্লাহ) ইন্তেকাল করেন। সদ্য জন্ম নেয়া এই তারকার নাম

 মুসলিম। উপনাম আবুল হুসাইন। আরব রীতি অনুযায়ী পুরো নাম হলো আবুল হুসাইন মুসলিম ইবনে হাজ্জজ ইবনে আরদ ইবনে কুশাদ আলকুশাইরী।

 

সে সময়ে নিশাপুর ছিলো জ্ঞান চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। ঘর ও বাইরের পরিবেশ ছিলো জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞান বিতরণের জন্য এক অনন্য পরিবেশ। তাঁর পিতা নিজেও ছিলেন একজন হাদিস বিশারদ। আর তাই তাঁর শিক্ষার হাতেখড়ি নিজ পিতা-মাতার নিকটেই। আল-কুরআন হিফযের মতো মহৎকর্মটি ছোটোবেলায়-ই সম্পন্ন করেন তিনি। খুব-ই অল্প বয়স তখন তাঁর।

 

হাদিস শাস্ত্রে সহীহ্হাইন বা মুত্তাফাকুন আলাইহি  শব্দদ্বয়ের সাথে তো আমাদের সকলেরই পরিচয় আছে । বুখারী ও মুসলীম গ্রন্থদ্বয়কে একত্রে সহীহ্হাইন বলা হয়। আর একই হাদিস যা বুখারী শরীফ এবং মুসলিম শরীফেও উল্লেখ আছে - এমন হাদিসকে বলা হয় মুত্তাফাকুন আলাইহি !

 

তো মুসলিম শরীফের মতো জগতজোড়া সমাদৃত হাদিসগ্রন্থের সংকলকই তো ইমাম মুসলিম ইবনে হাজ্জাহ ( রহিমাহুল্লাহ)।  এই মুসলিম শরীফের মতো গ্রন্থের লেখা-সংকলনের মতো কাজ করেছেন যিনি, তাঁর স্মৃতির প্রখরতা-মেধার প্রগাঢ়তা কতোটা বেশি তা তো সহজেই অনুমেয়! এই মেধাবী মানুষের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় নিশাপুরের আদর্শ বিদ্যালয়ে। সেখানেই তিনি অসাধারণ মেধা-স্মৃতিশক্তির প্রখরতা প্রদর্শন করেন। নিরবচ্ছিন্ন জ্ঞানসাধনার সাক্ষর রাখেন সেসময়েই। সেখানেই। আর ঠিক সে সময়েই তাঁর চরিত্রের মাধুর্যতা, ব্যবহারের অমায়িকতা ছাত্র ও শিক্ষকদের সম্মুখে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। তাঁর মার্জিত আচরণ আর অমায়িক ব্যবহারে মুগ্ধ হয় সকলেই।

পিতা-মাতার প্রতিও অগাধ আন্তরিকতা, প্রবল ভালোবাসা, প্রচণ্ড ভক্তি ও শ্রদ্ধা তাঁর রয়েছে সেই বাল্যকাল থেকেই। কখনোই যেতেন না তাঁদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে। করতেন কোনো কাজ। উপেক্ষা করতেন না তাঁদের কোনো আদেশ অনুরোধ ও উপদেশ!

 

আমাদের চুলগুলো তো একটু পেকে গেলে চিন্তিত হয়ে পড়ি। মন খারাপের জগতে ডুব দিয়ে ফেলি। নিজেকে আনস্মার্ট আনস্মার্ট মনে করতে থাকি। এবং করিও। নানাবিধ কালার করি চুলের মাঝে। তবুও যদি একটু স্মার্ট লাগে আমাকে -এই চিন্তায়। এই উদ্দেশ্যে। কিন্তু এই মহান ইলম সাধকের মধ্যে খুব অল্প বয়সেই বার্ধক্যের সুস্পষ্ট চাপ ফুটে ওঠে । শুভ্রতায় ছেয়ে যায় চুল-দাড়িগুলো। তবে সেদিকে করতেন না তিনি কোনো ভ্রুক্ষেপ। একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীন থাকতেন সে-সব নিয়ে। জ্ঞান চর্চায়, দ্বীনের প্রচার-প্রসারে যারা নিবেদিত প্রাণ তাঁদের সে-দিকে মনোনিবেশ করার সুযোগ-সময় কোথায়?

 

এই যে অতি-অল্পবয়সেই চুল-দাড়িতে শুভ্রতার বন্যা নেমে এসেছে -- সেটাকে তিনি নিয়েছেন, দেখেছেন আভিজাত্য হিশেবেই । এসব নিয়ে হাহুতোশ না করে জ্ঞানসাধনায় আর উম্মাহর কল্যাণকামনায় নিজেকে রেখেছেন ব্যতিব্যস্ত -নিয়োজিত ! ক্লাসেও ছিলেন পূর্ণদ্যোমে সক্রিয়-মনযোগী। যে হাদিসটা শিক্ষকের জবান থেকে উতসারিত ও উচ্চারিত হতো,  শিক্ষক যা-ই বলতেন তা-ই লিপিবদ্ধ করে রাখতেন তিনি। সুযোগ পেলেই অকারণে খোশগল্পে মেতে থাকতেন না। বরং পাঠ নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনায় বসতেন। নিজেদের মধ্যেই মজলিস গড়ে তুলতেন।

 

উস্তাদের লেকচার সুগভীর মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করতেন। তন্ময় নেত্রে তাকিয়ে শিক্ষকের চেহারার মাঝে। প্রতিটি কথা ধারণ করতে চেষ্টা করতেন নিজে মগজের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে! এতোসব গুণাবলি আর পড়াশোনার প্রতি অগাধ আন্তরিকতার কারণে উস্তাদরাও ওনাকে খুব মুহাব্বাত করতেন। ভালোবাসতেন। পাঠের প্রতি তাঁর অগাধ আন্তরিকতা, জ্ঞানের প্রতি তাঁর সুগভীর তন্ময়তায় শিক্ষকরা বিস্মিত হতেন। বিমুগ্ধ হতেন।

তিনি নিশাপুরের যেই বিদ্যালয়ে পড়তেন, সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তৎকালীন সময়ের হাদিসের আরেকজন বিদগ্ধ স্কলার ইমাম মুহাম্মদ ইয়াহিয়া যুহলী (রাহিমাহুল্লাহ)! অল্প দিনেই তিনি ইমাম যুহলীর প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠলেন।

 তৎকালীন সময়ের খুরাসান-নিশাপুরের সকল মুহাদ্দিসদের নিকট, শিক্ষকদের নিকট থেকে ইলমুল হাদিসের জ্ঞান অর্জন করে চলে গেলেন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ; যেসকল স্থানে হাদিসের জ্ঞান পাওয়া যায়- সে সব স্থানে।

আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর জমিন থেকে পরপারে পাড়ি দেবার পরে সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুরাও চলে গিয়েছেন নানা দেশে, নানা জনপদে -হাদিসের বাণী নিয়ে, ইসলামের বার্তা নিয়ে। তাওহীদের ঝান্ডা নিয়ে। বিভিন্ন দেশের-অঞ্চলের কেন্দ্রীয় মাসজিদগুলো একেকটা যেনো হাদিসের পাঠশালায় পরিণত হয়েছে। সাহাবিদের- তাবেয়ীদের দারসে মুখরিত হয়ে থাকতো মাসজিগুলো। দামেস্কের কেন্দ্রীয় জামে মাসজিদে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা) হাদিসের দারস দিয়েছেন। ইমাম মুসলিম রহঃ-ও সে-সকল দেশে, সে-সব অঞ্চলে ইলমুল হাদিসের জ্ঞান আহরণের জন্যে ছুটে যেতেন। গিয়েছেনও। সিরিয়া লিবিয়া দামেস্ক বাগদাদ বসরা -একেবারে সব জায়গায় গিয়েছেন। আর সংগ্রহ করেছেন আল্লাহর রাসুলের মুখনিঃসৃত অমীয় বাণী - মণি-মুক্তো সমূহ!

জাঁকজমক আর বাহারী কোনো তেলেসমাতি ছিলো না তাঁর পোশাকআশাকের মাঝে। জীবন চলার পথে। তাই বলে আবার অপরিচ্ছন্ন আর নোংরা লেবাসে কিংবা জীবনপদ্ধতিকেও বেছে নেন নি! যা ছিলো, যতোটুকুনই ছিলো তাকেই পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন করে পরিধান করতেন। ব্যবহার করতেন। ব্যক্তিগত জীবনযাপনে যতোটা সরল ছিলেন বাস্তব মনুষ হিশেবে মনের দিকেও ততোটাই সরল আর ইখলাসপূর্ণ ছিলেন। তাঁর হৃদয়-মনে যে অপরিসীম সরলতা, আচরণের মাঝে যে অনুপম মাধুর্যতা- সেটা ছিলো তাঁর সবচেয়ে বড়ো গুণ। আর সেই গুণের ছোঁয়া বন্ধু-সুহৃদ-সহপাঠি-সকর্মী এবং শিক্ষকদের হৃদয়কেও ছুঁয়ে দিতো।

 

শিক্ষক বা শায়খদের অন্ধভাবে মানা বা আনুগত্য থেকেও ছিলেন বিমুক্ত। যা সত্য তা-ই গ্রহণ করতেন।আমার উস্তাদ বা আমার আকাবির বলেছেন বলে তা গ্রহণ করেন নি। মেনে নেন নি! এক শায়খের পক্ষ হয়ে অন্যজনকেও করেন নি গায়েল। আবার বড়োদের বিষয়ের ভীড়ে ঢুকে পরিবেশও গরম করেন নি।

একটা ঘটনা বলি, তা হলে বিষয়টি বুঝতে সুবিধে হবে। তিনি তখন পড়াশোনা করতেন ইমাম ইয়াহইয়া যুহলী রাহিমাহুল্লাহের নিকট। তাঁদের সেই নিশাপুরেই। কয়দিন পরে সেই নিশাপুরে আগমন করলেন হাদিস শাস্ত্রে বিশ্ব সম্রাট ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ। সেখানে তিনি আসার সাথে সাথে মানুষ ওনাকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করতে শুরু করেছেন। মানুষজন ওনার সাথে সাক্ষাৎ করতে, ওনার থেকে হাদিসের দারস নিতে পঙ্গপালের মতো ছুটে আসতে লাগলেন। তুমুল জনপ্রিয়তা পেতে লাগলো তাঁর দারসে হাদিসগুলো। অন্যদের পাঠশালায় ধীরে ধীরে ছাত্রদের ভীড় কমে যেতে লাগলো। সহ্য করতে পারেন নি তাঁরা তাঁর এমন জনপ্রিয়তা-গ্রহণযোগ্যতা।

কেউ হক্ক কথা বললে, কারো জনপ্রিয়তা কিংবা কারো গ্রহণযোগ্যতা দেখলে আমাদের সময়ে, আমাদের সমাজে যেভাবে অপবাদ দেয়া হয়, অন্যায় অভিযোগ করা হয়। বাটপার, ইহুদিদের দালাল, ভ্রান্ত, অমুকের দালাল তমুকের এজেন্ট বলে হেনস্তা করা হয় ; তদ্রুপ সে সময়েও কিছুটা সেরকমই হতো। হিংসুটে ব্যক্তিদের পাশাপাশি রাষ্ট্রশক্তির পক্ষ থেকেও কখনো কখনো হত্যা করা হতো , জেলেপুরে দেয়া হতো, নির্যাতন করা হতো। স্বয়ং  ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।  

যাই হোক, বলছিলাম ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ'র কথা। ওনার তুমুল জনপ্রিয়তা দেখেও তৎকালীন সময়ের নিশাপুরের কিছু আলিমও ওনার বিরুদ্ধে পুষে ওঠেছে। মিথ্যে অভিযোগ আর অপপ্রচারের ঢেউ এসে আছড়ে পড়লো ইমাম যুহলীর মস্তিষ্কেও।

তিনিও তাঁকে ভুল বুঝতে লাগলেন। ভুল বুঝাবুঝির তীব্রতা এতো বেশি ছিলো যে, তিনি ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ'র বিরুদ্ধে খুব বেশিই ক্ষেপে ওঠে। ক্লাসেও ছাত্রদেরকে ওনার বিরুদ্ধে বলতে শুরু করলেন। নিজ ছাত্রদেরকে ইমাম বুখারীর দারসে যেতে নিষেধ করতেন। কিন্তু ইমাম (মুসলিম রাহিমাহুল্লাহ) নিয়মিত ওনার কাছেও যেতেন। তাঁর থেকে ইলমুল হাদিসের জ্ঞান আহরণ করতেন।

তিনি নিজ উস্তাদ বিরোধিতা করছে বলে কিংবা উস্তাদ তিরস্কার করে বা নিষেধ করে - সে জন্য নিজেও অন্ধভাবে বিরোধিতা শুরু করেন নি, আজকে আমরা যা করি আরকি। তিনি দুজনকেই সম্মান করতেন। শ্রদ্ধা করতেন। উভয়ের থেকেই উপকৃত হতেন। তিনি যে নিয়মিত ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ'র নিকট যেতেন সে কারণে তাঁকে ইয়াহিয়া যুহলী তিরস্কার করতেন। সর্বশেষ এ-কারণে তাঁকে যুহলী (রহঃ)এর মজলিশও ত্যাগ করতে হয়েছে। 

তবুও তিনি একজনের পক্ষ নিয়ে আরেকজনকে গালাগাল করতেন না। অশ্রদ্ধা বা অসম্মান করেন নি। আজকের যুগে তো আমরা এক শায়খের পক্ষ নিয়ে অন্য শায়খের ইজ্জতকে ধুলোয় ধূসরিত করে ফেলি ! আমরা যাঁরা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস অনুসরণ করতে চাই, তাদের সেই হাদিসের সংগ্রহকারক, সংকলকদের এই যে সুন্দর চিন্তাও আদর্শ -সেই আদর্শে উজ্জীবীত হওয়া উচিত।

আমার এবং আমাদের মুখে আমাদের কথায় রাগে-অনুরাগে, বিবাদ-বিস্বাদে, কারণে-অকারণে অমূলক কথা, অসুন্দর শব্দ চয়ন হয়ে যায় । চলে আসে। কিন্তু তাঁর মুখ থেকে কখনোই কোনো কটুবাক্য বের হয় নি। গালাগাল আসেনি। আমরা তো রাগের মাথায় কতো কিছুই বলে ফেলি। কিন্তু মানুষটা রাগও করতেন না কখনো। আগেও বলা হয়েছে যে, তাঁর আচরণের সবচেয়ে সুন্দর বিষয়টি-ই হচ্ছে মাধুর্যময়ী চরিত্র।

অসংখ্য শিক্ষক থেকে তিনি নিয়েছেন হাদিসের জ্ঞান। ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ ছাড়াও জগতবিখ্যাত জাঁদরেল সব মুহাদ্দিসীন, ফুকাহায়ে কেরাম থেকে নিয়েছেন তিনি ইলমুল হাদিসের শিক্ষা। উস্তাদ হিসেবে তিনি পেয়েছেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহিমাহুল্লাহকেও। এভাবে তাঁর শিক্ষক ছিলো দুইশো জনের ওপরে। ইমাম যাহাবী রহ. এর মতে ওনার শিক্ষক ছিলেন দুইশো তেরো জন। আর ইমাম সাখাভী রহঃ এর মতে সেই সংখ্যাটা ছিলো দুইশো সতেরো জন।

 

এতো এতো উস্তদদের থেকে তিনি ইলমুল হাদিসের জ্ঞান আহরণ করে নিজের জ্ঞানকে করেন সমৃদ্ধ। অনবরত পরিশ্রম ও সাধনা করে তিন লক্ষ হাদিসের সুবিশাল সংগ্রহ থেকে যাচাই-বাছাই করে মাত্র সাত হাজার বিশুদ্ধ হাদিস নিয়ে একটি গ্রন্থ সংকলন করেন। যা তাঁকে আইম্মাতুল মুসলিমীনের নিকট রেখেছেন আজো অমর। সারা দুনিয়ার সকল মু'মিন তাঁর এই অবদানের কাছে ঋণী হয়ে আছে। তিনি উম্মাহর জন্যে ২৯ টি গ্রন্থ রচনা করলেও বাকীগুলো তেমন পাওয়া যায় না। ওনার সব গ্রন্থই প্রায় হাদিস সংক্রান্ত। এবং কিছু কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হলেও প্রকাশহীন রয়েছে বাকীগুলো। ইমাম যাহাবী তাঁর তাযকিরাতুল হুফফায গ্রন্থে তা-ই উল্লেখ করেছেন।

তাঁর যেমন অসংখ্য উস্তাদ ছিলো, তদ্রূপ ছাত্র সংখ্যাও ছিলো অনেক! আবু বাকর ইবনে খুযায়মা, আবু হাতেম রাযী, আবু ঈসা তিরমিজি, মূসা ইবনে হারুনের মতো জগদ্বিখ্যাত সব আহলুল ইলমগণ তাঁর শাগরিদ ছিলেন। অগণিত জাঁদরেল সব মুহাদ্দিস তিনি তৈরি করেছেন। সেই শাগরেদ তথা ছাত্রদের অনুপ্রেরণাতেই তিনি বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ রচনা করার তাড়া অনুভব করেন।

আমরা তো অনুজ হলে, জুনিয়র হলে তথা আমি পণ্ডিত হলে আমার নিজের আত্মসম্মানবোধের (!) দিকে চেয়ে জুনিয়রদের পরামর্শকে মানতে কষ্ট হয়। শুনতে কষ্ট হয়। চাই না তাদের কথায় কর্ণপাত করতে। কিন্তু ইমাম মুসলিম (রহঃ) এর ভেতর না ছিলো অতিরিক্ত ও অযথা অহমিকা , না ছিলো অন্যকে অবমূল্যায়নের মতো ক্ষুদ্র মন-মনন ! তাই তিনি তাঁর ছাত্রের অনুরোধ বা পরামর্শ শুনে একটা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন "আসসাহীহ্" প্রণয়নের!

ইমাম মুসলিম (রহ.) তাঁর সংকলিত গ্রন্থ মুসলিম শরীফ হিসেবে পরিচিত "আসসহিহ'' নামক গ্রন্থের ভূমিকায় উক্ত মহান গ্রন্থখানি রচনার দুটো কারণ উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে একটা হলো ওনার ছাত্র আবু ইসহাক ইব্রাহিম তাঁর কাছে একটি উন্নতমানের বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ সংকলন করার অনুরোধ-পরামর্শ জ্ঞাপন করেন। হাদিস শাস্ত্রের ছাত্রদের অবশ্যই জানা আছে যে, তিনি তাঁর রচিত গ্রন্থ "আসসহিহ'র" ভূমিকায় তাঁর সেই ছাত্রের জন্য দুআও করেছেন।

দ্বিতীয় যে কারণটি আছে তা হলো তিনি বর্ণনা করেছেন যে, কেবল তোমার ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে সহিহ হাদিসগুলো বাছাই করার মতো এতো দুরূহ কাজের যে কষ্ট, সেই শ্রম ও কষ্টকে সহজেই বরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। কিন্তু যখনই আমি জানতে পারলাম যে কথিত মুহাদ্দিসরা সাধারণ মানুষের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের নামে বানোয়াট কথাগুলো এবং মুনকার হাদিসগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বিরাট রকমের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেভ, তখন তোমার অনুরোধে সাড়া দেয়াটা আরো অত্যধিক সহজ হয়ে গেলো আমার জন্যে।

 

তিনি মওজু ও দুর্বল হাদিস থেকে সহিহ হাদিস বেছে বের করার লক্ষ্যে কিছু কঠিন শর্তের ভিত্তিতে হাদিস যাচাই ও বাছাই করেছেন। শর্তগুলো হলো ;

১) মুত্তাসিলুস সনদ। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (সা.) পর্যন্ত হাদিস বর্ণনাকারীদের পরম্পরা ধারাবাহিক হতে হবে। কোনো পর্যায়ে কোনো বর্ণনাকারীর নাম অজানা থাকলে তিনি সেই সনদে কোনো হাদিসই গ্রহণ করেননি। ২) রাবি তথা হাদিস বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য হতে হবে। যদি কোনো বর্ণনাকারীর মধ্যে ন্যায়পরায়ণতার অভাব থাকে, বর্ণনাকারী যদি তার বর্ণিত হাদিসের বিপরীতে আমল করতেন তখন তিনি তাঁর থেকে কোনো হাদিস গ্রহণ করেননি। ৩) বর্ণনাকারী তাঁর ঊর্ধ্বতন বর্ণনাকারীর সামসময়িক হওয়া। বর্ণনাকারী এবং তিনি যাঁর কাছ থেকে হাদিস গ্রহণ ও বর্ণনা করছেন উভয়েই সমকালীন হওয়া। ৪) রাবি মানে হাদিসের বর্ণনাকারী প্রখরও ধারালো স্মৃতিশক্তির অধিকারী হওয়া। সাধারণভাবে স্মৃতির দুর্বলতা থাকলে তিনি যতো বড়ো সৎ আর নির্ভরযোগ্যই হোন কেন তাঁর দ্বারা মহানবী (সা.) এর অমীয় বাণীসমূহকে নির্ভুলভাবে ধারণ করা এবং তা ছড়িয়ে দেয়া কখখনোই সম্ভব নয়। (ঙ) ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর পঞ্চম শর্ত হলো, যে হাদিসটি বর্ণানা করা হয়েছে, সেই হাদিসের মতন তথা বা মূল কথাটি সব ধরনের দোষ-ত্রুটি বিমুক্ত হওয়া।

 ইমাম মুসলিম (রহ.) কর্তৃক সহিহ হাদিস নির্বাচনে এই যে যাচাই-বাছাই, তা হাদিস সম্রাট ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহও করেনি। যার কারণেই অনেকে মুসলিম শরীফকে বোখারি শরিফের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন।

 

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেছেন যে,

                                            'সহিহ মুসলিম রচনার পর থেকে আজ পর্যন্ত মুহাদ্দিসদের কাছে এই গ্রন্থখানি যতোখানি               সমাদৃত হয়েছে, ততোটা সমাদৃত আর কোনো গ্রন্থ হয়নি।'

আবু আলী নিশাপুরী (রহ.) বলেছেন,

                     'মুসলিমের গ্রন্থের চেয়ে অধিক কোনো বিশুদ্ধ গ্রন্থ আর নেই।

 

এই যে গ্রন্থখানা। এটা সংকলন করতে তিনি সুদীর্ঘ পনেরোটা বছর পর্যন্ত প্রচেষ্টা করেছেন। তাঁর তথা ইমাম মুসলিম (রহঃ)-এর সুপ্রিয় ছাত্র আহমাদ ইবনে সালামা (রহ.)-ই তাঁকে এই গ্রন্থ প্রণয়নকালে প্রাণপণে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে গিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি মুহতারাম ইমাম মুসলিমের সঙ্গে তাঁর আসসআহীহ রচনাকালে সুদীর্ঘ পনেরো বছর ধরে লেখালেখির কাজ করেছি । (আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত তাঁর এই খিদমতকে কবুল করে নিন। ( আমীন) ।

 ইমাম মুসলিম রহঃ এর সম্পর্কে তাঁর সামসময়িক কিংবা তাঁর উস্তাদদের অসংখ্য মূল্যায়ন থেকে ওনার মর্যদা-মর্তবা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ মিলে। ওনার শিক্ষক মুহাম্মদ ইবনে আবদিল ওয়াহাব ফাররা বলেন তিনি (ইমাম মুসলিম রহঃ) মানবজাতির মধ্যে বিশিষ্ট আলিমদের অন্যতম ছিলেন। ইলম ও আক্বলের অফুরন্ত ভাণ্ডার ছিলেন তিনি। তাঁর মাঝে শুধু সৎগুণের সমাহারই আমি দেখতে পাই। এর বাহিরে আমি ভিন্ন কিছু সম্পর্কে অবগত নই!

ইসহাক ইবনে কোশাদ রহিমাহুল্লাহ ওনাকে বলেন, আল্লাহ যতোদিন আপনাকে মুসলমানদের জন্য জীবিত রাখবেন ততোদিন পর্যন্ত আমরা মুসলমানগণ পরম কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবো না !

ওনার হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে টের পাওয়া যায় ইবনে আখরাম (রহ.) এর একটা উক্তিতে। তিনি বলেছেন আমাদের এই শহর মাত্র তিনজন হাদিসবেত্তাকে জন্ম দিয়েছেন। তার মধ্যে মুসলিম হলো অন্যতম !

হাদিস সংকলনের অপূর্ব সুন্দর বর্ণনা আর রচনাশৈলীর জন্যে ওনার গ্রন্থকে অনেকেই যে বুখারীর ওপরের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে পূর্বে তো সে-কথা বলা হয়েছেই। যেমন তিনি কখনো রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের মধ্যে সাহাবায়ে কিরাম কিংবা তাবি'ঈদের হাদিসকে স্থান দেন নি। রাবি তথা বর্ণনাকরী থেকে যেমন শুনেছেন তেমনিভাবেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। একটা হাদিসের একাধিক রাবির বর্ণনা যদি একই অর্থযুক্ত দুই শব্দ থাকে তবে তিনি তা-ও উল্লেখ করেছেন। রাবি যদি দাস হয়ে থাকেন ,তা হলে রাবির মনিব কে , সেটা-ও উল্লেখ করেছেন ! এবং তাঁর গ্রন্থে তিনি সে সমস্ত সহিহ্ হাদিসই নিয়ে এসেছেন, যেসব হাদিসের ওপর হাদিস শাস্ত্রে পারদর্শী বিজ্ঞজনেরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন। হাদিস যদি সহিহ্ও হয়ে থাকে কিন্তু তৎকালীন সময়ের হাদিস বিশারদগণ যদি সে হাদিসের ওপর একমত হতে পারতেন তখন তিনি সে হাদিসকে তাঁর গ্রন্থে স্থান দেন নি ! কতোটা বিশুদ্ধতা বজায় রেখে উম্মাহকে এমন একটা গ্রন্থ তিনি উপহার দিয়েছেন, ভাবা যায়??

 আরো মজার বিষয় হচ্ছে যে , তিনি তাঁর হাদিসগ্রন্থে কখনো কখনো রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাদের আমলও উল্লেখ করেছেন।

 

 

 এই জন্যেই ইমাম ইবনে কাসিম আল কুরতুবী (রহঃ) বলেন,  

                     ইমাম মুসলিম (রহঃ) এর পূর্বে এই জাতীয় হাদিসের গ্রন্থ কেউই প্রণয়ন করতে পারেনি। এই হাদিস গ্রন্থটি সর্বোত্তম পদ্ধতিতে সাজানো-গোছানো, এবং বিন্যস্ততার দিক থেকেও সর্বশ্রেষ্ট !

 

ইবনে ইসহাক ইবনে মান্দাহ (রহ.) তো আরো অধিক অগ্রসর হয়ে বলেন যে,

                    মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ রচিত কিতাবটির চেয়ে অধিক বিশুদ্ধ কোনো গ্রন্থ আসমানের নিচে নেই!

তবে খতিব বাগদাদী (রহঃ) এর মতে ইমাম মুসলিম ইমাম বুখারীর পথেই হেঁটেছেন। প্রতিটি পদক্ষেপেই ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ’র হুবহু অনুকরণ করেছেন।

 দ্বীনের প্রচার-প্রসারে যারা নিবেদিত প্রাণ, তারা সবসময় সবভাবেই তা করে থাকেন। তদ্রুপ তিনিও ছিলেন। মাজলিশ-মাহফিলের মাধ্যমে আল্লাহর নবীর বাণীগুলো ছড়িয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করতেন।তো ইমাম মুসলিম (রহঃ) মাঝেমধ্যেই হাদিসের দারস বা মাহফিলের যে আয়োজন করতেন , সেখানে নানান দেশ নানান অঞ্চল থেকে মানুষ এসে ওনার বক্তৃতা  থেকে হাদিসের জ্ঞান, শিক্ষা ও বুঝ গ্রহণ করতেন।

তেমনিভাবেই একদিন তিনি এমন করে হাদিসের মাজলিশ নিয়ে বসলেন। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে তাঁর থেকে হাদিসের শিক্ষা ও বুঝ নিতে থাকলেন। একজনের একটা সমাধান খুঁজে খুঁজে তিনি হয়রান। পান নি কোথাও। গিয়ে ঢুকলেন নিজ কক্ষে। মনোযোগ দিয়ে হাদিসের গ্রন্থগুলো একের পর এক উল্টোতে লাগলেন। একান্ত নিভৃতে। এদিকে মানুষ তো সবসময়ই আলিমদের সম্মানে কিছু না কিছু উপঢৌকন দিয়ে থাকেন, নিয়ে আসেন। আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের কাছেও তো আসতো তা। ওনার কাছেও একঝুঁড়ি খেজুর এসেছে সেদিন। ওনার সামনে তা এনে বলা হলো এগুলোর একটা হিল্লে করতে। তিনি বললেন এখানে রাখো। আমি আগে কাজটা সেরে নিই ,এরপর তা দেখছি।

এর ফাঁকে তিনি কিতাবের পর কিতাব মন্থন করে যেতেই লাগলেন। মাঝেমধ্যে দুয়েকটা খেজুর মুখে পুরে দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তন্ময় হয়ে হাদিসের সুবিশাল সংগ্রহের একের পর গ্রন্থ খুঁজেই যাচ্ছেন ! খুঁজেই যাচ্ছেন। আর এদিকে অন্যমনস্ক হয়ে খেজুর গলাধঃকরণ করেই যাচ্ছেন। এক পর্যায়ে তাঁর হুঁশ ফিরে আসে। হুশ আসার পরে তিনি হতচকিত হয়ে পড়েন। ততোক্ষণে ঘটে গেছে বিপত্তি। হয়ে গেছে বিপদ। ভীষণ বিপদ!! পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন টীণী। সেই যে আক্রান্ত হলেন, আর হোন নি সুস্থ। জীবনের যবনিকাপাত ঘটে এভাবেই। সেসময়ই । ইন্না-লিল্লাহি ওয়া-ইন্না ইলাইহি রাজিউন! মৃত্যুকালে ওনার বয়স ছিলো হিজরী ২৬১ সনের ২৪ শে রজব মোতাবেক ৫৫ বছর। আল্লাহ ইমাম মুসলিম (রহঃ) এর কবরকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাগান হিসেবে কবুল করুন! (আ-মী-ন) ।

শেষ পর্যায়ে ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহকে নিয়ে আল্লাহর মুখলিস বান্দাদের দুটো স্বপ্নের কথা উল্লেখ করতে চাই। তা হলো ইমাম আবু হাতিম রাযি একদিন ওনাকে তথা ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহকে স্বপ্ন দেখেন। দেখা হলে জিজ্ঞেস করেন তাঁর সার্বিক খোঁজ খবর। উত্তরে তিনি বলে নআল্লাহ আমার জন্যে জান্নাতের সকল দরোজা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। আর সে কারণে আমি এখানে মুক্তভাবে বিচরণ করতে পারছি। পারছি হাঁটা-চলা করতে। তদ্রূপ বিদগ্ধ মুহাদ্দিস আবু আলী আয যাগুনী (রহ.) ওনাকে স্বপ্ন দেখেন। দেখেন তিনি জান্নাতে। আনন্দময় জীবন ধারণ করেছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন আপনি কীভাবে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেলেন ? জবাবে তিনি সহীহ্ মুসলিমের কিছু হাদিস দেখিয়ে বললেন, এ-সকল হাদিসের বদৌলতেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়েছি!

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সকলকে কবুল করুন। আর ইমাম মুসলিম রাহিমাহুল্লাহকেও ফিরদৌসের ফুল বাগানে আশ্রয় দান করুন। আ-মী-ন।

 

 

||মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ রাহিমাহুল্লাহ||

~রেদওয়ান রাওয়াহা

Comments

Popular posts from this blog

কেমন ছিল শেখ মুজিবুর রহমান

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ের অপপ্রয়োগ