Posts

Showing posts from August, 2021

মুহাম্মাদ ﷺ ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ইনসাফকারী ও শান্তিকামী

Image
  ব্যক্তিজীবনে মুহাম্মাদ ﷺ শৈশব-কৈশোর এবং শিশুকালেও ছিলেন ইনসাফকারী। শান্তিকামী। অন্যের অধিকারের ব্যাপারে ছিলেন সদা তৎপর। আমরা জানি, তিনি যখন দুগ্ধ পান করার বয়সী শিশু ছিলেন, সে সময়েও কিন্তু তিনি একটি থেকে পান করতেন। অন্যটি তাঁর দুধ ভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। কখনো জোর করেও তাঁকে অন্যটি থেকে খাওয়ানো যায় নি। যখন বড়ো হলেন একটু, তখন দেখলেন তাঁদের সমাজের রাহাজানি, বেহায়াপনা। গোত্রে গোত্রে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ-সংঘাত। তিনি সে সময়েই তাঁর সমাজের সেসব অসংগতি নিয়ে ভাবতেন। ভাবতেন, তাদেরকে এসব অধঃপতন থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায়! সে কারণে তিনি তাঁর সমচিন্তার লোকজনকে সাথে নিয়ে গড়ে তুললেন “হিলফুল ফুযুল” নামক একটি শান্তিসংঘ। সে সংঘটি দুর্বলদের নিরাপত্তা বিধান করার কাজে ছিলো যথেষ্ট সচেতন। মানুষকে গোত্রে গোত্রে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধসমূহ থেকে নিবৃত করতে দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছিলো। ইতিহাস যার সাক্ষী। মদিনাতুল মুনাওয়ারায় গিয়ে যখন রাষ্ট্রনায়ক হলেন, তখনও তিনি মুসলিম-মুশরিক-ইহুদি— সবারই ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছেন। তিনি কতোটা মানবিক, কতোটা ন্যায়নিষ্ঠ ছিলো, তা তাঁর সংখ্যালঘু অমুসলিমদের অধিকার নিয়ে দেওয়া ...

|| অন্যের সমালোচনা ||

Image
  “ যে কাজ করে সে ভুল করে ! যে কাজ করে না সে ভুল ধরে ! ” অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটাই এক বিরাট রকমের নির্মম সত্য ! বিষয়টা মনে হয় যেনো এমন যে , কাজ পায় না তো করবে টা কী! ভুল ধরো প্রচার করো! সেগুলোর বই করো , নোট করো নেটে ছাড়ো। প্রয়োজনে আংশিক কিংবা পূর্ণ মিথ্যের আশ্রয়গ্রহণ করো — এটাই হয় ওসব লোকের উসুল তখন । তাই বলে কি আমরা কারো যৌক্তিক সমালোচনা বা ভুল ধরবো না ? তা ধরবো। অবশ্যই ধরবো। সমালোচনা না থাকলে তো মানুষের সংশোধনের রাস্তাটা রূদ্ধ হয়ে যাবে। মানুষ দিনের পর দিন ভুল-ভ্রান্তির বালুচরে নিমজ্জিত হয়ে থাকবে। সে জন্য আমরা সমালোচনা করবো। গঠনমূলক সমালোচনা। তবে সেখানে যেনো দরদ থাকে। কল্যাণকামিতা থাকে। যার সমালোচনা করছি তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতি যেনো আঘাত না আসে। তাঁর যেনো মান-শান অটুট থাকে । কিন্তু বড্ড পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে, আমাদের মাঝে সেটা তো নেই-ই; বরঞ্চ যারা আমাদের এসব বিষয় নিয়ে সচেতন করে তাদের আমরা নানা অবিধায় অবিধিত করি.. . দরদের পরশে ইখলাসের সাথে যে সমালোচনা হয় সেখানে আছে প্রভুত কল্যাণ। মানুষ সেই সমালোচনা দ্বারা সংশোধনও হয় অনেক বেশি। যে সমালোচনার ভাষা আক্রমণাত্মক। ব্যক্তির মান-মর্য...

// একটি ইবলিশি ধারণা //

Image
  ফেরেশতাদের সাথে পরামর্শ শেষ করার পরে একজন ফেরেশতা বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি এনে আল্লাহর সামনে দিলেন । সেই মাটি ছিলো আঠালো মাটি। তিনি নিজ হাতেই সেই মাটি দিয়ে সৃষ্টি করলেন আদমের অবয়ব। রূহ দিলেন না তখনও আল্লাহ সেই অবয়বের মধ্যে। সেই অবয়বটি চল্লিশ রজনী পর্যন্ত পড়ে থাকলো। ইবলিশ এসে এসে ঘুরে যেতো সেই অবয়বের আশেপাশে। ঘুরে ঘুরে দেখতো। তাচ্ছিল্ল্য করতো। এই তাচ্ছিল্যতেই শুধু সীমাবদ্ধ থাকতো না সে। পা দিয়ে তাতে আঘাত করতো। অবয়বটির মুখ দিয়ে ভেতরে ঢুকতো আর পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে দাম্ভিকতার সাথে বলতো— তুমি কিছুই হওনি। ঝনঝন কিংবা শো শো করে আওয়াজ সৃষ্টির কাজেও তুমি যথাযথ হওনি! আমার আয়ত্তে পেলে তোমাকে আমি নিঃশেষ করে ফেলবো। আমার ওপর যদি তোমাকে শ্রেষ্ঠত্ব-কর্তৃত্ব দেওয়া হয়— তা হলে আমি কখনো তোমার অনুগত হবো না। মানবো না তোমার শ্রেষ্ঠত্ব। অবশেষে আল্লাহ অবয়টির মাঝে রূহ ফুঁকে দিলেন। সৃষ্টি হয়ে গেলেন পৃথিবীর প্রথম মানব। হ্যাঁ, সাঈয়েদুনা আদম আলাইহিস সালামের কথায়-ই বলছিলাম! এবার আল্লাহ ডাক দিলেন সকল ফেরেশতাকে। বললেন সিজদাহ করো একে। এক এক করে সকল ফেরেশতা নুয়ে পড়লেন সিজদায়। কিন্তু ইবলিশ ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো ! করলো না ...

আদর্শিক রাষ্ট্রের পরিচয়ে সাঈয়িদ আবুল আ'লা মওদূদী রহিমাহুল্লাহ

Image
  ⏹️আদর্শিক রাষ্ট্রের পরিচয় দিতে গিয়ে উস্তায সাঈয়িদ আবুল আ'লা মওদূদী রহিমাহুল্লাহ তাঁর "ইসলামি রাষ্ট্র কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়" বইতে বলেন : ১. আদর্শিক রাষ্ট্র হবে সম্পূর্ণ জাতীয়তাবাদের কলুষমুতাক্ত। ২. এ রাষ্ট্র পরিচালনায় বংশ, গোত্র, জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা নির্বিশেষে সকলেই অংশীদার হয়ে যাবে। ৩. জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রসমূহের গঠনের কর্মপন্থা ও আদর্শিক রাষ্ট্র গঠনের কর্মপন্থা কখনো এক হতে পারে না। ৪. আদর্শিক রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হল মানুষ ও মানব জাতি। যারা আমাদের ওপর তথা মুসলমানদের ওপর সুশীলতা ফলাতে আসে তেমন কিছু মতবাদের অসারতা বর্ণনা করেন। যেমন ফরাসি বিপ্লব। খৃষ্টবাদ। সমাজতন্ত্র। এদের সম্পর্কে তিনি বলেন : ক. খ্রিষ্টবাদ আদর্শিক রাষ্ট্রের অস্পষ্ট নকশা লাভ করেছিলো, কিন্তু আদর্শিক রাষ্ট্রের কাঠামো লাভ করেনি। খ. ফরাসী বিপ্লব ও সমাজতন্ত্রে আদর্শিক রাষ্ট্রের ক্ষীণ রশ্মি দেখা দিলেও তাতে অচিরেই অন্ধ জাতীয়তাবাদ ঢুকে পড়ে। এবং তারা একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়। ➡️এক্ষেত্রে তিনি বলেন : >>পৃথিবীর প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত একমাত্র ইসলাম-ই পারে এবং পেরেছিলো জাতীয়তাবাদের যাবতীয় সংকীর্ণ ভ...

।। মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের প্রতি মহানবি ﷺ-এর অপরিসীম উদারতা ।।

Image
  মুনাফিকি-গাদ্দারি আর বেঈমানির রেকর্ড তালাশ করলে যে ব্যক্তিটির নাম সর্বপ্রথম উঠে আসবে, সে হলো আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সূলুল। হেন কোনো ষড়যন্ত্র নেই, যা সে রাসুলে কারিম ﷺ-এর জন্য, মুসলিমদের জন্য করে নি। নিফাকির নজিরবিহীন উদাহরণ আছে তার বিরুদ্ধে। কতোভাবেই না আল্লাহর রাসুলকে সে কষ্ট দিয়েছে। উহুদের যুদ্ধে পেছন থেকে ৩০০জন মুজাহিদ নিয়ে ভেগে গেছে। আল্লাহর রাসুলের সাহাবিদেরকে যেনো মদিনাবাসী দান না করে, সে ব্যাপারে উস্কানি দিয়েছে। এতোটুকুন করেই থেমে থাকে নি সে। একযুদ্ধে সে তাঁর অনুসারী মুনাফিকদের বললো, মদিনায় ফিরলে সম্মানিতরা ( সে এবং তাঁর অনুসারী মুনাফিকরা ) নিকৃষ্টদের ( নবিজি ও তাঁর সাহাবাদেরকে সে নিকৃষ্ট বলেছে) বের করে দেবে। [ আল-কুরআন : ৬৩ / ০৭-০৮] দ্বীন প্রচারের কাজে সে আল্লাহর রাসুলকে কতোভাবেই না কটুক্তি করেছে। কতো তুচ্ছতাচ্ছিল্য ব্যক্তিগতভাবেও করেছে। একদিন রাসুল ﷺ নিজের বাহনে করে যাবার সময় তার সামনে পড়লে, সে বলে সরে যাও। তোমার গাধার গন্ধ আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। আরো একবার আল্লাহর রাসুল ﷺ তার সাথে একদল লোককে দেখতে পেয়ে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন। তখন সে আল্লাহর রাসুল ﷺ-কে বললো; সরে ...

কষ্ট করে শুভাকাঙ্ক্ষীদের পড়ার অনুরোধ..

Image
  আমি গতোবার মানে রমাদানের পর দীর্ঘ দেড় মাস ডিয়েক্টিব ছিলাম। রমাদান মাসের প্রথম পনেরো দিনও ছিলাম। এভাবে প্রায়শই আমি ডিয়েক্টিব থাকি। ফেসবুক একটা নেশা। এখানে অনেক সময় ক্ষয় হয়। আগে স্রেফ বিনোদনের জন্যই ফেসবুকে আসতাম। চালাতাম। পরে শেখার উদ্দেশ্যেই চালাতাম ফেসবুক। অনেকের সাথেই কথা হতো। চ্যাট হতো। প্রয়োজনে কিংবা কখনো মনে চাইতো, তাই। সে সুবাদে পরিচয় হয়েছি বাস্তব জীবনে একেবারেই অপরিচিত অনেকের সাথেই । পরবর্তীতে বাস্তব জীবনেও কারো কারো সাথে পরিচিত হয়েছি।  লেখালেখি আগে থেকেই ভালো লাগে। হাবিজাবি কতো কিছুই লিখতাম। সেসব নিয়েও আমার বন্ধু-ভাই-সুহৃদরা সমালোচনা করেছেন।  এরপর এক সময় চিন্তা করছি নিজে যদ্দুর জানি, যদ্দুর শিখছি তা অন্যদের সাথেও শেয়ার করার। সে চিন্তা থেকে লেখালেখির ধরন-প্রকৃতিও পরিবর্তন করতে চেষ্টা করছি। কারো সমালোচনা, কিংবা কারো প্রশংসায় আমি কখনো প্রভাবিত বা পরিবর্তন হই নি। হ্যাঁ, কেউ যদি গঠনমূলক সুন্দর-নসীহামূলক সমালোচনা করে, তা মানতে চেষ্টা করি। তবে আমার মানাটা মন থেকে না হলে আমি পারি না তা। যখন আমার মনে হয়েছে লেখার ধরন-নিজস্ব কিছু কর্ম পরিবর্তন করা উচিত, তখন আমি তা করেছি। ম...

|| এক মহাবিস্ময়কর কুরবানির গল্প ||

Image
ফিলিস্তিনের মানুষ তিনি। বয়স তাঁর বেড়েই চলেছে। কিন্তু আজ অবধি একজন সন্তান নেই। অথচ স্ত্রী আছে। সংসার আছে। একজন সন্তানের জন্য তাঁর বুকেজুড়ে চলছে প্রবল হাহাকার। তাই তো আল্লাহর কাছে তিনি কাতর কন্ঠে মিনতি করলেন একজন সন্তানের জন্য। স্বলিহিন সন্তান। আল্লাহ তাঁর দু’আ কবুল করলেন। একজন সন্তানের শুভ সংবাদ দিলেন। অবশেষে একদিন ওনার স্ত্রীর কোলজুড়ে দুনিয়ায় এলো ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান। এই বৃদ্ধ বয়সে সন্তান পেয়ে তাঁর মনের ইথারে ইথারে আনন্দের ফল্গুধারা ছড়িয়ে যেতে লাগলো। খুব খুশি হলেন তিনি। ছেলের একটি সুন্দর নামও রাখলেন— ইসমাঈল। কিছুদিন যেতেই তিনি মুখোমুখি হলেন এক কঠিন পরীক্ষার। আল্লাহ রব্বুল আলামিন তাঁকে আদেশ দিলেন যে, তিনি যেনো তাঁর স্ত্রীকে শিশু সন্তানসমেত রেখে আসেন মক্কার জনমানবহীন এক মরুপ্রান্তরে। আল্লাহর আদেশ পাবার সাথে সাথেই তিনি বুকের ভেতর জমে থাকা মমতার বহরকে চাপিয়ে সেই প্রবল আকাঙ্ক্ষিত শিশুপুত্র আর স্ত্রীকে নিয়ে রেখে এলেন জনমানবহীন মক্কার একটি গাছের নিচে। হ্যাঁ, আল্লাহর এই কঠিন আদেশের কাজটি অতি সহজে যিনি সম্ভব করলেন, তিনি হলেন আমাদের জাতির পিতা, মুসলিম মিল্লাতের পিতা সাঈয়েদুনা ইবরাহিম আলাইহিস ...