কষ্ট করে শুভাকাঙ্ক্ষীদের পড়ার অনুরোধ..
আমি গতোবার মানে রমাদানের পর দীর্ঘ দেড় মাস ডিয়েক্টিব ছিলাম। রমাদান মাসের প্রথম পনেরো দিনও ছিলাম। এভাবে প্রায়শই আমি ডিয়েক্টিব থাকি। ফেসবুক একটা নেশা। এখানে অনেক সময় ক্ষয় হয়। আগে স্রেফ বিনোদনের জন্যই ফেসবুকে আসতাম। চালাতাম। পরে শেখার উদ্দেশ্যেই চালাতাম ফেসবুক। অনেকের সাথেই কথা হতো। চ্যাট হতো। প্রয়োজনে কিংবা কখনো মনে চাইতো, তাই। সে সুবাদে পরিচয় হয়েছি বাস্তব জীবনে একেবারেই অপরিচিত অনেকের সাথেই । পরবর্তীতে বাস্তব জীবনেও কারো কারো সাথে পরিচিত হয়েছি।
লেখালেখি আগে থেকেই ভালো লাগে। হাবিজাবি কতো কিছুই লিখতাম। সেসব নিয়েও আমার বন্ধু-ভাই-সুহৃদরা সমালোচনা করেছেন।
এরপর এক সময় চিন্তা করছি নিজে যদ্দুর জানি, যদ্দুর শিখছি তা অন্যদের সাথেও শেয়ার করার। সে চিন্তা থেকে লেখালেখির ধরন-প্রকৃতিও পরিবর্তন করতে চেষ্টা করছি। কারো সমালোচনা, কিংবা কারো প্রশংসায় আমি কখনো প্রভাবিত বা পরিবর্তন হই নি। হ্যাঁ, কেউ যদি গঠনমূলক সুন্দর-নসীহামূলক সমালোচনা করে, তা মানতে চেষ্টা করি। তবে আমার মানাটা মন থেকে না হলে আমি পারি না তা। যখন আমার মনে হয়েছে লেখার ধরন-নিজস্ব কিছু কর্ম পরিবর্তন করা উচিত, তখন আমি তা করেছি। মন থেকে আসার আগ অবধি কখনো কারো কিছু বলা বা এটা-সেটা গায়ে মাখি নি।
এখন তো ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে খুব বেশি সময় ক্ষয় না করারও চেষ্টা করি ধীরে ধীরে। নিজের পড়াশোনা, কাজকর্মে আরেকটু মনোযোগী হওয়ার জন্যই তা করি। তবুও আমার কোনো প্রয়োজন হলে আমিও নক করতাম, কিংবা টুকটাক খোঁজ খবর নিতেই। এবং আমাকেও কেউ যদি ম্যাসেজ করতো আমিও যথাসাধ্য চেষ্টা করতাম সবগুলো ম্যাসেজের রিপ্লে দিতে। এমন কোনো নজির সম্ভবত নেই যে, আমাকে নক করেছে কেউ, আর আমি রিপ্লে দিই নি!
তবুও যখন দেরি হয়ে যায়, বা সম্ভব হতো না, তখন অনেক ভাই-বোনের থেকে খুব বেশিই হৃদয়-রক্তাঝরা কথা শুনতে হয়েছে! শুনিয়ে করেছেন ব্লক। কেউবা নীরবেই। কেউ কেউ অহংকারী, ভাব দেখাই, নিজেকে অনেক কিছু মনে করি, দুই আনার সেলিব্রিটি ইত্যাদি এমন অনেক অবিধায় অভিযুক্তও করেছেন। টিটকারি করেছেন।
কেউ কেউ আবার মেয়ে বলে সন্দেহ করেন, কিছু কিছু আল্লাহর বান্দা তো মেয়ে মনে করে উল্টাপাল্টা ম্যাসেজও করেছে! যেগুলো বলার ভাষা নেই। জিদের চোটে হয়ত কাউকে কিছু কটুকথা আমিও শুনিয়ে দিয়েছি। তবে চেষ্টা করছি সর্বদা নিজের মেজাজের নিয়ন্ত্রণ করতে!
যাইহোক, এই যে এমন নানাবিধ বিষয়, এসব নিয়ে খুব কষ্ট পেতাম একটা সময় । কিন্তু সবগুলো ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে শিখেছি, আল্লাহর রহমতে!
ইদানীং আমি ফেসবুকে ফিরে আসার পরে আমার ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে কাজ করতে এমন লোকজনকেও ম্যাসেজ ফরোয়ার্ড করেছি, কিংবা সরাসরি নক করেছি --যাদের সাথে পূর্বে কখনো হায়-হ্যালো, সালাম-কালাম বিনিময় পর্যন্তও হয় নি! অনেকের কাছেই দেখা গেছে আমার একই ম্যাসেজ একাধিকবার গিয়েছে। চ্যানেলটি নিয়ে আপনাদের বিরক্ত করেছি। তবুও আলহামদুলিল্লাহ অনেকেই সাবস্ক্রাইব করেছেন। আপনাদের সকলের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো!
আমি চিন্তা করছি ফেসবুক এক্টিভিটি যেনো ফলপ্রসু হয়। দাওয়াতি কাজের একটা মাধ্যম হয়। কিন্তু আসলে এটা যদ্দুর দাওয়াতি কাজ হয়, শেখার কাজ হয়, তারচেয়ে ঢের ক্ষতি হয়। সময় ক্ষয়ের ক্ষতি! আমলের ক্ষতি। ঈমান-ইখলাস-তাক্বওয়ারও ক্ষতি!
তাই চিন্তা করছি আমি আপাততঃ আবারো বেশ কিছুদিন ফেসবুক চালাবো না! নিজেকে আরো বেশিই শোধরাবার চেষ্টা করবো। করছিও টুকটাক। জ্ঞান অর্জন, আত্মগঠনের দিকেই পরিপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করতে চাই। ইন শা আল্লাহ!
এক সময় আবারও ফিরে আসবো বা আসার ইচ্ছে আছে দা'ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে। তা আরো মজবুত ঈমান আর অমলের অধিকারী হয়েই আসবো ইন শা আল্লাহ!
আমার খুব ছোট্ট থেকেই শখ ছিলো যে, আল্লাহর পথের একজন নির্ভীক সৈনিক হবো। স্বপ্ন দেখতাম দা'ঈ ইলাল্লাহ হবো। অনেক অর্থবিত্তের মালিক হবার কোনো স্বপ্ন কখনোই ছিলো না। জশখ্যাতির আকাঙ্ক্ষা কস্মিনকালেও মনে আসে নি। কিন্তু আমি আমার নফসের কাছে বারবার হেরে গেছি। আমার স্বপ্ন বারবার ভেঙে গেছে। বারবার আমার চিন্তা চেতনার বিবর্তন ঘটেছে।
কখনো কখনো মনে মনে খুব সেক্যুলার হয়ে ওঠেছি। কখনো কখনো হতাশা আর দুঃখের দহন থেকে হয়ে গেছি ইসলাম নিয়ে একপ্রকার তীব্র সংশয়ী। প্রায় অবিশ্বাসের কাছাকাছি । সংশয় দূর করতে, মনের কুঠুরিতে জেগে ওঠা প্রশ্নগুলোর জবাব পেতে যখন কারো কাছে গিয়েছি, তখন নৃশংস ভাষায় সমালোচিত হয়েছি। মৌখিক আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে!
কেউ কেউ তো আমাকে চুপা নাস্তিক হিসেবে অভিযোগ করেছে, সন্দেহ করেছে। অন্যায় সমালোচনা আর কথার তীব্র তীরে বিদ্ধ করে জখম করেছে আমার কোমল হৃদয়টা। তাদের কেউ কেউ এখনো আমার ফ্রেন্ড-ফলোয়ারের লিস্টে আছে। কিংবা দুয়েকজন তা জানেও। আমি সবার সবকিছু ভুলে যেতে না পারলেও সবকিছুকেই ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার আল্লাহ ক্ষমাকরা ভালোবাসেন।
ইসলামি পাড়ায়ও কারো কারো নিজস্ব মাসলাকের না হওয়া নৃশংস ঘৃণা আর প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে একাধিকবার। নানাভাবে। নানান রকমে। তবে আমি চাই না আমার কোনো মুসলিম ভাইকে ঘৃণা করতে। চাই না কোনো মানবের থেকেও দরদ আর ভালোবাসাটা উঠিয়ে নিতে। সকলকে ভালোবাসতে না পারলেও যেনো ঘৃণা না করি, সেই প্রচেষ্টাটাই করবো। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আল্লাহর প্রতিটি বান্দাকে কলিজা উজাড় করা ভালোবাসা দিতে। ইন শা আল্লাহ।
আমি আবারও ফেসবুক এক্টিভিটি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদেয় হয়েছি। আমার জন্য আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ভাইবোনেরা দু'আ করবেন। আমার কোনো পোস্টে, আমার কোনো ম্যাসেজে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি সকলের কাছেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
তবে আমার এই টেলিগ্রাম চ্যানেলটা আছে। লেখালেখি টুকটাক যদ্দুর সম্ভব করবো। এবং তা টেলিগ্রামে দেবো। আর যদি সম্ভব হয়, তা হলে তিলাওয়াত আপলোড করার চেষ্টা করবো ইউটিউবে।
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ ওবারাকাতুহু। আপনাদের এই ভাইটির জন্য দু'আ করবেন প্লিজ!
টেলিগ্রাম চ্যানেলটা ইচ্ছে হলে আপনাদের পরিচিত মহলের মধ্যে দ্বীনের প্রসার-প্রচার-সদাক্বায়ে জারিয়ার উদ্দেশ্যে শেয়ার করতে পারেন। ইউটিউবে আমার নাম লিখে সার্চ দিলে যে চ্যানেল আসবে, ওটাই আমার চ্যানেল।
আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া,
ReplyDeleteকেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া। আপনি?
Delete