"পশ্চিমা স্কলারস এবং জামায়াত-শিবির"

 





পশ্চিমা জনগণ কিংবা পশ্চিমা ইসলামিক স্কলার, তাদের সবারচেয়ে আমাদের এখানের মানুষ কিংবা আলিমদের ইসলামের বুঝ ভালো। তাদের চাইতে এখানের মানুষ ভালো ইসলাম চর্চাকারী।

পশ্চিমা স্কলারগণ থাকে, খাও, ঘুমায় কা.ফি.র-মুশ.রিকদের কোলে, সে হিসেবে তারা কথাবার্তা বলতে, মতামত দিতে দিবে তাদের অনুকূলেই। তাদের বাস্তবতা মাথায় রেখেই।

হুবহু তুরস্কের ক্ষেত্রেও একই কথা। সেখানে কামাল পাশা এসে ইসলামের নাম-নিশানাটুকুনও মুছে দিয়েছে। ইসলামের ওপর চিরুনি অভিযান চালিয়েছে। চেষ্টা করছে ইসলামকে শেকড় সমেত উপড়ে ফেলতে।

এই যখন অবস্থা, তখন সেসব দেশের মানুষ আমাদের দেশের মানুষের মতো ইসলাম প্র‍্যাক্টিস করবে, আমাদের মতো বুঝবে, এটা আসলে অতোটা সহজ নয়।

আমাদের মা-বোনেরা অনেকেই দেখা যায় এমন দৃঢ় পর্দা করেন যে, তাদের হাত-পা এবং চোখও দেখা যায় না। পক্ষান্তরে সেসব দেশের অধিকাংশই দেহের শুধু গুরুত্বপূর্ণ দুটো অংশও ঠিকভাবে ঢেকে রাখে না।

তো এই যখন অবস্থা তাদের, তখন সেখানে যদি কেউ সামান্য  একটা জিন্স পরে পট্টি বাধে মাথায়, তাহলে তাকে তো পীর না, ফেরেশতার চাইতেও বড়ো কিছু ভাবা-ই যায়। কিন্তু আমি যদি এখন সেসব দেশের উদাহরণ টেনে, সেসব দেশের স্কলারদের মতামতকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করে বাংলাদেশের মধ্যেও সেসব চিন্তার প্রসার ও প্রচার ঘটাই, প্রমোট করি, তবে নিঃসন্দেহে তা ভুল এবং সেটা থেকে ধীরে ধীরে আরো বড়োসড়ো ভুলের উৎপত্তি ঘটাবে। যে ভুলগুলো আমাদেরকে টেনে নিয়ে যাবে জাহিলিয়াতের দিকেই।

আর এখন দেখা যাচ্ছে এই জাহিলিয়াতেরই প্রচার প্রসার ঘটাতে চাচ্ছে শিবিরের কিছু অতি ইন্টেলেকচুয়াল সাবেক ভাই, এবং তারা এসব চিন্তা ও কর্ম ছাত্রীসংস্থার দলছুট কিছু বোনেদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছে মূল সংস্থার মধ্যে থেকে ভাগিয়ে নিয়ে ।

অথচ উচিৎ তো হচ্ছে যে, তাদের দেশের মানুষের মধ্যে আমাদের দেশের বা উপমহাদেশের বড়ো এবং সেরা আলিমদের চিন্তা এবং আমল প্রসারিত করার। কিন্তু আফসোস আর হতাশার ব্যাপার হচ্ছে তা না করে, ইসলামের নাম দিয়ে সেসব মডার্নিজম খাওয়ানো হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষকে। আমাদের জনগণকে।

শিবিরের ভাইদের এবং ছাত্রীসংস্থার বোনদেরকে এসব মর্ডানিজম গেলানো অতি ইন্টেলেকচুয়াল এক্স নেতা-নেত্রীদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এদের প্রভাবে যা হচ্ছে, তা হলো :

- এক নাম্বার দলছুট হচ্ছে

- সাংগঠনিক আনুগত্যের বলয় থেকে বের হয়ে নেতৃত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা আর অনাস্থার মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে স্বয়ং তারা নিজেরাই তা করছে।


- ইসলামের নামে আল্ট্রামডারেট হচ্ছে। এমনকী দীনের বিধিবিধান যারা আগে এক্সট্রিমলি ফলো করতো, তারাও তাদের পূর্বেকার অবস্থান ছেড়ে শিথিলপন্থার আশ্রয় গ্রহণ করছে।


সুতরাং বাংলাদেশের মেইনস্ট্রিম ইসলামিক অরগানাইজেশান হিসেবে জামায়াতের উচিৎ এদের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করা পশ্চিমা স্কলারসদের সচেতনভাবেই গ্রহণ করা। সে গ্রহণ-প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, তা নিজেরা নিজেদের কর্মপন্থার আলোকে এবং স্থানীয় বাস্তবতার আলোকেই ঠিক করতে হবে।

সর্বশেষ আমি মনে করি, কেউ যদি বাংলাদেশে সেক্যুলার হতে চায়, তাহলে তাকে স্থানীয় বাস্তবতা মেনে এবং মনে রেখেই সেক্যুলার হতে হবে, মডারেট হতে হলেও তাকে স্থানীয় বাস্তবতা মেনে মডারেট হতে হবে......



~রেদওয়ান রাওয়াহা

Comments

Popular posts from this blog

কেমন ছিল শেখ মুজিবুর রহমান

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ের অপপ্রয়োগ