"নারীদের নিকাব করা তথা মুখ ঢাকার বিষয়ে ইমাম মওদূদী রহিমাহুল্লাহর অবস্থান কী?"




 "নারীদের নিকাব করা তথা মুখ ঢাকার বিষয়ে ইমাম মওদূদী রহিমাহুল্লাহর অবস্থান কী?"

সাঈয়িদ মওদূদী রহিমাহুল্লাহ স্বীয় পর্দা ও ইসলাম বইতে বলেন,
❝জ্ঞানেরও প্রয়ােজন নাই। আপনি নিজের মনকেই জিজ্ঞাসা করুন। আপন চক্ষুদ্বয়ের নিকটেই ফতােয়া তলব করুন। স্বীয় মানসিক পরীক্ষায় যাচাই-পর্যালােচনা করিয়া দেখুন। ভন্ডামির কথা পৃথক। ভন্ড-মুনাফিক যদি সূর্যের অস্তিত্ব স্বীকারকেও নিজের স্বার্থের পরিপন্থী দেখে তাহা হইলে সে দিবালােকের সূর্যের অস্তিত্ব অস্বীকার করিয়া বসিবে। যদি সত্যকে অবলম্বন করেন, তাহা হইলে স্বীকার করিতে হইবে যে, যৌন আবেগ-আবেদনের [Sex Appeal] বেলায় দেহের সমস্ত সৌন্দর্যের অধিকাংশই আল্লাহ তায়ালা মুখমন্ডলে দান করিয়াছেন।
যদি কোন মেয়েকে আপনার বিবাহ করিতে হয়, আর যদি তাহাকে দেখিয়া শেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে চাহেন, তাহা হইলে সত্য করিয়া বলুন, তাহার কি দেখিয়া সিদ্ধান্ত করিবেন?
এক তাে এই হইতে পারে যে, সে আপনার সম্মুখে মুখমন্ডল ব্যতীত তাহার সর্বাঙ্গ ঢাকিয়া থাকিবে।
দ্বিতীয়ত এই হইতে পারে যে, সে কোন বাতায়নের ফাঁকে তাহার মুখাবয়ব দেখাইয়া দিল।
বলুন এখন এই উভয় প্রকারের মধ্যে কোন্‌টিকে আপনি গ্রহণ করিবেন? সত্য করিয়া বলুন যে, সমগ্র দেহের তুলনায় মুখের সৌন্দর্য কি আপনার নিকট অধিক গুরুত্বপূর্ণ নহে?❞
দেখুন, এখানে ইমাম মওদূদী রহিমাহুল্লাহ কিন্তু নিকাব করাকে যারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করতে চান না, তাদেরকে তিনি পরোক্ষভাবে ভণ্ড এবং মুনাফিক বলেছেন। এবং চেহারাই যে একজন মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সৌন্দর্যের আধার, তিনি তা-ই বলেছেন।
এরপরেও ইউরোপ-আমেরিকা কিংবা তুর্কি প্রভাবিত মডারেট মোল্লাদের শাগরেদরা মওদূদী রহিমাহুল্লাহর নাম বিক্রি করে খেয়ে তুর্কী বা ইউরোপ-আমেরিকার মডার্নিজম বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে আমদানি করবে। আর মওদূদী এবং তাঁর চিন্তার অনুসারী ওলামাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করবে!
এরা নিজেরা সারাজীবন নিজেদের এতো সুন্দর আর ভারসাম্যপূর্ণ গঠনমূলক সিলেবাসের দুটো বইও ঠিকমতো অধ্যয়ন করেনি, কিন্তু এখন দুয়েকটা পরিভাষা আরবিতে ব্যবহার করে, আর কিছু কিছু মানুষ মনে করে বাপ্রে বাপ এরা তো মনে হয় যুগ শ্রেষ্ঠ মুজতাহিদ মুজাদ্দিদ!

অথচ এরা যে একটা পবিত্র আন্দোলনকে অপবিত্র করতেছে, ফতোয়া দিয়ে তাকওয়ার পথ থেকে নেক সহজ-সরল জনশক্তিকে সরাচ্ছে, খুলুসিয়াত আর তাকওয়া নষ্ট করতেছে ইসলামের নাম দিয়ে, বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণের নাম দিয়ে- তা বলতে গেলে এবং সেসব সংশোধনের কথা বলতে গেলেই আমরা হিংসুক হয়ে যাই ! অথচ এরাই আমাদের কাছে কাছে এসে, এবং শিবির-সংস্থার ভাই-বনেদের ইনবক্সে এসে দাওয়াত দিয়েছে, ক্লাস করতে বলেছে, প্রমোট করতে বলেছে, তখন কিন্তু কোনো ধরনের হিংসুক মনে হয়নি। এমনকি যখন এদের প্রকাশিত পত্রিকা নিজের ফেসবুকওয়ালে শেয়ার করেছি, প্রচার করেছি তখনও হিংসুক ছিলাম না ! ছিলো না আমাদের কোনো দোষাবলীও । এখন আজ এসব অগ্রহণযোগ্য কর্মপদ্ধতির যৌক্তিক জবাব দেওয়ার কারণে কী অদ্ভুত হিংসা-আর ঘৃণার চাষাবাদই না করছে এরা.........



১০.০৪.২২ ইং

Comments

Popular posts from this blog

কেমন ছিল শেখ মুজিবুর রহমান

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ের অপপ্রয়োগ