Posts

Showing posts from January, 2023

"একজন শহীদ তিতুমীর ও আমাদের স্বাধীনতা"

Image
০১. তিতুমীর! বাঁশেরকেল্লা! এদুটো শব্দ একটি আবেগের নাম। একটি শক্তিশালী চেতনার নাম। ০২. বিপ্লব। জিহাদ-সংগ্রাম। তিতুমীর। এই শব্দগুলো যেনো একে অপরের সাথে ভীষণ অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজের সবটুকুন উজাড় করে দিয়ে কীভাবে ঈমানের তপ্ত-বারুদ জ্বালিয়ে বিদ্রোহ করতে হয়, কীভাবে জিহাদের জ্বালাময়ী জজবা প্রজ্জ্বলিত করতে হয়— তার উজ্জ্বল উদাহরণ হলেন এই তিতুমীর। ০৩. শহীদ মাওলানা তিতুমীর রহিমাহুল্লাহ শুধু মুসলমানদের নিকটই নয়, সারা পাক-ভারত উপমহাদেশের সকল মজলুমের নিকটই একটি চেতনার নাম। একটি সংগ্রামী চিত্রের নাম। পরিশুদ্ধ প্রেরণার প্রতিচ্ছবি নাম। তিনি আমাদের হারানো স্বাধীনতাকে পুনরুদ্ধারের প্রবল আকাঙ্ক্ষায়, বৃটিশ দস্যুদের এই ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদের জন্য, এবং তাদের মদদপুষ্ট হিন্দু জমিদারদের নিপীড়ন থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে ১৮৩১ নারিকেলবাড়িয়ায় স্বাধীনতাকামী, ঈমানের শক্তিতে বলিয়ান একদল ঈমানদার মুজাহিদদের নিয়ে একটি মুজাহিদ শিবির স্থাপন করেন। ইতিহাসের সোনালি পাতায় তা ‘তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লা’ নামে পরিচিত। বাঁশেরকেল্লার মুজাহিদদের এই বাহিনীকে তিনি প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। জিহাদের প্রেরণায় উজ...

বায়তুল মোকাররম

Image
  মসজিদ। মুসলিম উম্মাহর সকল কাজের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে এসে মিটে যায় সব বাধা-ব্যবধান। মিটে যায় বড়-ছোট, সাদা-কালো, ধনী-গরিব, উঁচু-নিচুর সব পার্থক্য। আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে যখন মদিনাতুল মুনাওয়ারায় হিজরত করেছেন, তখন কুবা নামক স্থানে গিয়ে কয়েকদিন অবস্থান গ্রহণ করেন। আর সেখানেই গড়ে তোলেন মুসলমানদের ইবাদাত-গৃহ। ইতিহাসের পাতায় সেই গৃহটির নাম মসজিদে কুবা হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। এরপর আল্লাহর বান্দা এবং রাসূলে করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের উম্মতেরা পৃথিবীর যে প্রান্তে যখনই গিয়েছেন, সেখানেই গড়ে তুলেছেন মসজিদ।  তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের এই সবুজ জমিনেও অগণিত মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশের এই অগণিত মসজিদের প্রধান মসজিদ তথা জাতীয় মসজিদ হচ্ছে বায়তুল মোকাররম। ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এ মসজিদটি ধারণক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বে ১০ম মসজিদ। পাকিস্তান আমলের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি জনাব আবদুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি এবং তাঁর ভাতিজা ইয়াহইয়া বাওয়ানি মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আর তাদের সেই সুমহান উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে ১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মোকাররম মসজি...

"ইংরেজ ডাকাতদের চাওয়া, আজকের শিক্ষাব্যবস্থা এবং আমাদের করণীয়"

Image
এ কথা তো আমরা সকলেই জানি যে, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা হচ্ছে বৃটিশদের প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থা। সুতরাং এইশিক্ষা ব্যবস্থা থেকে দিনশেষে এমন কিছু মানুষ অতি-অবশ্যই বের হবে, যারা হবে তাদেরই এদেশীয় এজেন্ট। তাদের চিন্তা চেতনা, তাদের আদর্শ-উদ্দেশ্য এই শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষেরাই আমাদের সমাজে, আমাদের সংস্কৃতিতে, আমাদের আমাদের সভ্যতায়, আমাদের রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করবে। করেও যাচ্ছে। হুবহু এই এটা-ই চেয়েছেন ইংরেজরা। এই সম্পর্কে কোনো রাখঢাক না করে স্পষ্ট একটা সত্য কথা বলেছেন খ্যাতনামা ব্রিটিশ পণ্ডিত, ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক নেতা  টমাস বাবিংটন মেকলে ।  মেকেলে বলেন — আমাদেরকে এমন একটা শ্রেণি গড়ে তুলতে হবে। যারা রক্ত-মাংসে, গড়নে-গঠনে ভারতীয় হবে বটে- কিন্তু রুচি-অভিরুচী, মত-পথ, চিন্তা-চেতনায়, নীতি-নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তায় হবে সাচ্চা ইংরেজ! তারাই পরবর্তীতে আমাদের হয়ে তাদের জনগণের মধ্যে কাজ করবে। উক্ত ভদ্রলোক তাদের পার্লামেন্টে (বৃটিশ পার্লামেন্টে) আরো বলেন, ‘আমি ভারতবর্ষের (বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান) দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ঘুরে বেড়িয়েছি, কিন্তু কোথাও একজন ভিক্ষুকও আমার চোখে পড়েনি, একজন চোরও আম...

"শেখ মুজিব বিদ্বেষীদের সাথে আওয়ামী লীগের মাখামাখি"

Image
আওয়ামী লীগের পোলাপান কিংবা লীগের নেতা-কর্মীরা শেখ মুজিবুর রহমানকে কী বলে? তাদের প্রতিটা কথার পূর্বে, প্রতিটা বক্তব্যের পূর্বে তারা শেখ সাহেবকে তিনটা জিনিস অবশ্যই বলে। কম-বেশ হতে পারে। যেগুলো বলে, সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে : ০১. বঙ্গবন্ধু  (মানে বাংলার বন্ধু।  এই উপাধিটা ১৯৬৯ সালের ২৩-ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লীগের বর্তমান নেতা, ততকালীন ছাত্রলীগ নেতা, শহীদ আব্দুল মালেকের অন্যতম খুনি, তোফায়েল আহমেদ দিয়েছে)। ০২. হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি। ০৩. জাতির জনক / পিতা  (  ১৯৭১ সালের ০৩-ই মার্চ এই উপাধিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ভূষিত করেন বৃহত্তর নোয়াখালী- আজকের লক্ষীপুরের আ. স. ম আব্দুর রব )। মোটামুটি এই তিনটা প্রধান পরিচয়েই শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করিয়েছে আওয়ামী লীগের সরকার। এ কারণে এখন যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কট্টর বিরোধী, সে-ও শেখ মুজিবকে জাতির জনক বলে, বঙ্গবন্ধু ডাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই প্রিয় নেতার টাটকা দুশমন, তার চরম শত্রুদের সাথেই আজকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগের অন্যতম রাজনৈতিক বন্ধু, তাদের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী  ...

মেধাবীদের মেধা অপচয় ঝুঁকিপূর্ণ প্রজন্মের অশনিসঙ্কেত

Image
  মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ব্রেইনকে এমন ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে তৈরি করেছেন, যার ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্র ও বিভাগে বিশেষ অবস্থান নিশ্চিত করতে এবং অন্তত সকল বিষয়ে ওয়াকিবহাল হতে আমরা তৎপর হই। যে ব্যক্তি যতো বেশি ব্যাপৃত জ্ঞানের অধিকারী হতে চান, তার চিন্তার জগতের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সংযোগ ততো বেশি রাখতে হয়। অর্থাৎ, নির্ধারিত বিষয়ের বাইরে উক্ত ব্যক্তির চিন্তার বিচরণ রাখলে মূল্য উদ্দেশ্য হাসিলে বাধা আসে। যার ফলাফল হিসেবে উদ্দেশ্য হাসিলে বাধার পাশাপাশি শর্টটাইম মেমোরিলস পরিলক্ষিত হয়। ইদানীং শর্টটাইম মেমোরিলস নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবসমাজকে নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা বেশি। আলোচনাটা এরকম যে, বর্তমান সময়ের তরুণ-যুবকরা বিস্তৃত জ্ঞানের নানা দিক-বিভাগে বিচরণ করতে পারছে না। একজন ছাত্র একই সাথে সংশ্লিষ্ট নির্ধারিত একাডেমিক বিষয়াদির বাইরে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি নিয়ে ভাবতে চাইছে না বা পারছে না। এককেন্দ্রিকতা যেন পেয়ে বসেছে তাকে। এ তো গেলো জ্ঞানার্জনের বিষয়। এবার আমরা জ্ঞানের প্রয়োগের দিকে যদি তাকাই, তাহলেও বর্তমান তরুণ-যুবকদের অংশগ্রহণ কম দেখতে পাবো। বিশেষ করে আচরণগত এব...

বিশ্বকাপের রঙ্গ

Image
২০১৪ সালে ব্রাজিলে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে সেখানকার গরিব মানুষেরা স্টেডিয়ামমুখী দর্শকদের নিকট এটা-সেটা বিক্রি করত। খুব স্বাভাবিক। পৃথিবীর সব দেশের গরিব মানুষেরই প্রধান লক্ষ্য থাকে দু’মুঠো খাবার জোগানো। স্টেডিয়ামমুখী ‘দর্শকদের’ নিকট দরিদ্র ব্রাজিলিয়ানদের এই কেনাবেচায় কারো নাখোশ হওয়ার কথা না। কিন্তু একজন হয়েছিল, বেজায় নারাজ হয়ে ব্রাজিল সরকারকে বলেছিল এইসব ছুঁচকেদের বেচাবিক্রি বন্ধ করতে—ফিফা। ফিফার ভাষ্যমতে স্টেডিয়ামমুখী দর্শকদের নিকট পণ্য বিক্রির ‘অধিকার’ শুধুমাত্র ফিফার স্পন্সর কোম্পানিগুলোর। সো?? এইসব গরিব-কাঙ্গালদেরকে খেদাতে হবে। মজার ব্যাপার হল সেই বিশ্বকাপে ফিফার আয় ছিল মাত্র ৪.৭ বিলিয়ন ডলার! ওয়েট। সংখ্যাটা মিলিয়ন না, বিলিয়ন! এবং সেটা বাংলাদেশের টাকা না, ডলার। সেই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে ব্রাজিলের খরচ হয়েছিল ১৫ বিলিয়ন ডলারের মত। এবং ব্রাজিলিয়ায় Mane Garrincha স্টেডিয়াম নির্মাণেই ব্যয় হয়েছিল মাত্র এক বিলিয়ন ডলার!! এরচেয়েও সুখের বিষয় হচ্ছে এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের স্টেডিয়ামটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে বাসের ডিপো হিশেবে। ফ্রি তে একটা গাবতলি বাসস্ট্যান্ড পেয়ে যাওয়া খারাপ না অবশ্য। এটি জাস্ট ...

"ইসলামকে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, এমন ভাইদের প্রতি আমার কিছু উপদেশ"

Image
আমরা যারা আল্লাহর এই জমিনে আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করতে চাই, এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি, তাদেরকে সদা-সর্বদা আমানতদারিতার ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস হবার প্রয়োজন আছে। যেমন একটা উদাহরণ দিই, মনে করুন আপনি ইসলামী ছাত্র মজলিশ নামক সংগঠনটিতে আছেন। অথবা ছাত্রশিবির কিংবা ছাত্র জমিয়তের সাথেই আছেন। আপনি সে সংগঠনের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। আপনি সেসব সংগঠন কেন করেন? নিশ্চয়ই দীনকে ভালোবাসেন, দীন প্রতিষ্ঠা করতে চান বলেই তো করেন, তাই না? কিন্তু আপনি যখন নির্দিষ্ট করে একটা সংগঠন করেন, তখন আপনার কর্তব্য হয়ে যায় আপনি আপনার সংগঠনের শরীয়াহ বহির্ভূত নয়, এমন যাবতীয় বিষয়ের তথা যাবতীয় দৃষ্টিভঙ্গীর আনুগত্য করা। যাবতীয় তথ্যের হেফাজত করা। এ পর্যায়ে আরেকটা উদাহরণ দিই। মনে করুন আপনার সংগঠন কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত তৈরিকারীদের একজন আপনিও ছিলেন। কিন্তু আপনাদের সেই সিদ্ধান্তটা অফিসিয়ালি প্রকাশ করার আগে আপনি প্রকাশ করে দিলেন। বাহিরে প্রচার করে ফেললেন। কাউকে খুব বেশি কাছের মানুষ মনে হয় বিধায় তাকে জানিয়ে দিয়েছেন সেই সিদ্ধান্তটা। মনে রাখবেন প্রিয় ভাই, এটাও কিন্তু এক প্রকার আমানতের ...

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও সমাজে একজন আদর্শ মুসলিমের করণীয় কী?

Image
  পশ্চিমা এনলাইটেনমেন্টের কাছে ইসলামি বিশ্ব পরাজয়ের আগ পর্যন্ত মুসলমানদের দীন ও রাষ্ট্র কখনো আলাদা ছিলো না। ধর্ম ও রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো বিভাজন ছিলো না। কিন্তু যখনই পাশ্চাত্য সভ্যতা বিজয়ীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো, তখনই তারা তাদের নির্জীব ধর্ম থেকে রাষ্ট্রেকে পৃথক করে ফেলে। ধর্মকে তারা এক প্রকার বন্দী করে ফেলে। সেই থেকে তাদের জীবন-দর্শনে ভোগবাদ-বস্তুবাদ, ধর্ম-দর্শনে আজ্ঞেয়বাদ ও নাস্তিকতা, অর্থনৈতিক দর্শনে এক সময় সমাজতন্ত্র অন্য সময় পুঁজীবাদ জায়গা করে নেয়। এই দুয়ের মধ্যে দন্দ্ব সংঘাতও ঘটে ব্যাপকভাবে। এরপর তারা সমাজ-রাষ্ট্র-নৈতিক জীবনে সেকুলারিজম ও লিবারেলিজমের কোলে আশ্রয় গ্রহণ করে সেগুলোকে আপন করে নেয় । সাথে সাথে তারা তাদের এসব ব্যর্থ-মূল্যহীন মানবতা ও ঈমান বিধ্বংসী মতবাদগুলো মুসলিম দুনিয়া রপ্তানি করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করে।  পরাজিত মুসলিমরাও নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলে সেসব মতবাদকে আঁকড়ে ধরে নিজেদেরকে যুগোপযোগী আর প্রগতিশীল প্রমাণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যায়। তারাও বস্তুবাদ-ভোগবাদকে জীবনের কামনা মনে করে সেসবে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ভোগবাদ-বস্তুবাদ-পূঁজীবাদের শেকড় উচ্ছেদকারী দীন আল-ইসলামই যেহেতু...