রাজনীতি ও তারুণ্য
আমরা এবং আমাদের আশেপাশে সবাই অজস্র স্বপ্ন দেখি ও দেখে। চেখেমুখে সবার কতো সহস্র স্বপ্নের ভিড়। কিন্তু আমি আজতক এমন কাউকে পাইনি— যে স্বপ্ন দেখে ঢাকা মহানগরের মেয়র হবে।
আড়াই কোটি মানুষের এই শহরকে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের উপযোগী করে সাজাবার মতো কোনো স্বাপ্নিক ব্যক্তির সাক্ষাৎ আমার চোখে খুব একটা মেলেনি।
অথচ আমার আস্ত একটা জীবন কেটেছে এই স্বাপ্নিক কিশোর-তরুণদের সাথে কাজ করতে করতে।
কতো মানুষকেই তো কতো স্বপ্ন দেখতে দেখেছি। কেউ মিউজিশিয়ান হবে। কেউ সাইন্টিস্ট হবে। কেউ একাডেমিশিয়ান হবে। কেউ সাংবাদিক হবে। কেউ লেখক-সাহিত্যিক হবে।
কেউ কেউ স্বপ্ন দেখে অনেক বড়ো ব্যবসায়ী হবে। কারো-বা স্বপ্ন যুগশ্রেষ্ঠ আলিম হবে। কারো আবার আকাঙ্ক্ষা ইঞ্জিনিয়ার হবে। কেউ চায় একজন নামকরা ডাক্তার হতে। আবার কেউ চায় প্রশাসক হতে। ব্যাংকার বা বিসিএস ক্যাডার হতেও চায় অগণিত স্বাপ্নিক তরুণ।
কিন্তু এমন কাউকে পাইনি— যার স্বপ্ন শিক্ষাব্যবস্থাকে আমূল-পরিবর্তন করার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষার জন্য শিক্ষামন্ত্রী হবে।
এই দেশটাকে এখানের মানুষের বোধ-বিশ্বাসের আলোকে খোলনলচে বদলে দেওয়ার স্বপ্নে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান হতে চায়, এমন কারো দেখা মেলা ভার।
ঢাকা শহরে এতো এতো তুখোড় ও সচেতন মেধাবী মানুষ, অথচ এদের মধ্যে কেউ-ই সচেতনতার সাথে পরিকল্পিতভাবে একটা সুন্দর আদর্শ শহর-আদর্শ নগর উপহার দেওয়ার জন্য কোনো স্বপ্ন দেখে না।
একেবারেই যে দেখে না, তা না। দেখে। তা একেবারেই অল্প সংখ্যক।
আমি অনেক আগে দুয়েকজন ছোটো ভাইকে দেখেছি। যেমন এক ভাইকে পেয়েছি, যে ক্লাস এইট থেকে আমার সাথে পরিচিত।
ক্লাস নাইনে ওঠার পরে সে বলেছে ঢাকা সিটির মেয়র হতে চায়।
জানি না তার স্বপ্ন অনুযায়ী সে কাজ করছে কিনা। কিংবা স্বপ্নের ধাপগুলো সঠিকভাবে সাজাচ্ছে কিনা। এখন তো আমার সাথে দীর্ঘদিন থেকে যোগাযোগও নেই, সে সম্ভবত এবার বুটেক্সে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছে।
আমাদের রাজনীতিবিদরা আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশটা এতোটাই পচিয়ে ফেলেছে যে, যার কারণে ভালো আর সৎ কোনো মানুষ রাজনীতিবিদ হবার স্বপ্ন দেখে না অথবা দেখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না।
অথচ সৎ ও স্বাপ্নিক মানুষের নেতৃত্ব ছাড়া একটা জনপদকে বসবাসের উপযোগী করা যায় না। একটা জনপদকে পরিবর্তন করা যায় না। একটা জনপদের মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়া যায় না।
~রেদওয়ান রাওয়াহা
Comments
Post a Comment