শেখ মুজিবুর রহমান : বঙ্গবন্ধু না বঙ্গশত্রু?

 





শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপারে অনেকে আবার এটাও মনে করেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তর পরবর্তীতেই খারাপ হয়ে গেছে। একাত্তরের পূর্ব পর্যন্ত সে ভালো ছিলো। অথচ এটা একটা ডাহামিথ্যে কথা। 


বরং সত্য হলো একাত্তরের পূর্ব থেকে তো বটেই, এই লোকটি তার রাজনীতির সেই প্রাথমিক জীবন থেকেই অসভ্য এবং অসৎ ছিলো। উগ্র এবং খুনি মানসিকতার ছিলো। 


কেমন অসৎ আর অসভ্য, সেটা সে তার রাজনীতির প্রাথমিক জীবনেই প্রমাণ করে দিয়ে গেছে। শেখ মুজিবুর রহমান এতোটাই বর্বর, উগ্র আর অসভ্য ছিলো— সংসদে চাবুক পর্যন্ত নিয়ে যেত সে। সংসদে বিরোধী দলের কর্মীর সাথে ধ্বস্তাধস্তি, মারামারি পর্যন্ত করার রেকর্ড আছে এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে।  


পৃথিবীতে সম্ভবত একমাত্র তার বিরুদ্ধেই সংসদের স্পিকারকে হত্যা করার রেকর্ড রয়েছে। মানে সম্ভবত পৃথিবীতে শেখ মুজিবই একমাত্র ব্যক্তি— যে ব্যক্তি কিনা সংসদে বসেই সংসদে চেয়ার নিক্ষেপ করে স্পিকারকে হত্যা করেছে। বা হত্যার সময় ইন্ধন যুগিয়েছে।


শেখ মুজিবুর রহমানের এই উগ্রবাদী মানসিকতা, এই প্রচণ্ড সন্ত্রাসীপনা, পরমত অসহিষ্ণুতার স্বীকৃতি তার রাজনৈতিক গুরু— তিনি এক সময় যার বডিগার্ড ছিলেন— হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীও দিয়েছিলেন। সোহরাওয়ার্দীও মুজিবের প্রতি বিরক্ত এবং বিব্রতও ছিলেন। 


আজকে হাসিনা ভুয়া ভোট করে, ভোট ডাকাতি করে, মৃত মানুষের ভোট দিয়ে বসে থাকে। এর সবগুলোই শেখ মুজিবুর রহমানের বদগুণ। এটা শেখ মুজিব স্বাধীনতার পূর্বই করতো। পরেও করেছে। 


সম্ভবত এরকম নেতাও পৃথিবীতে কমই আছে— যে কিশোর শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষায় নকল করতে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা জোগায়। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান এটা করতো। মানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে নকল করার ব্যাপারে অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দিয়েছে। 


শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী ল্যাসপেন্সার নায়ক ফারুক খানকে স্বাধীনতা পূর্ববর্তীতে মেট্রিক পরীক্ষায় নকল করে পাশ করতে উৎসাহ দিয়েছে তারই লিডার শেখ মুজিব। এসব ব্যাপারে প্রকাশ্যে স্বীকৃতিও দিয়েছে নায়ক ফারুক খান এবং ইলিয়াস কাঞ্চন।


স্বাধীনতার পরবর্তীতে কী করেছে না করেছে, ইতোমধ্যে অনেক কিছুই আমরা জেনে গেছি বা আমিও লিখেছি।


 শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জেতাতে হেলিকপ্টার দিয়ে ভোটের বাক্স ডাকাতি পর্যন্ত করেছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেবল হাসিনাই নির্বাচন করেনি। ভোট ডাকাতি কেবল মুজিব কন্যা-ই করেনি  শেখ মুজিবুর রহমানও করেছে।


দুর্ভিক্ষ দিয়ে মানুষ হত্যা, বামপন্থী ও সর্বহারাদেরকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা, জাসদের ৩০/৪০ হাজার নেতাকর্মীকে স্রেফ তার রাজনৈতিক বিরোধী হয়ে ওঠার জন্যই হত্যা করেছে এই অভিশপ্ত শেখ মুজিব।


আজকে তার মতো একটা ফ্রডকে বঙ্গবন্ধু বলে মুখে এখনো ফেনা তুলে ফেলা হচ্ছে। ভালো ভালো দেশপ্রেমিক কিছু ব্যক্তিও, এমনকী ইসলামপন্থী রাজনৈতিক অসচেতন কিছু ব্যক্তিও তাকে বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে।


তার কর্মজজ্ঞ দেখে চিন্তা করুন— সে কি আসলেই বঙ্গবন্ধু নাকি বঙ্গশত্রু? 


দেখুন, একাত্তরের যে সময়টাতে যখন তার দলের সবাই কমবেশি সবাই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, তখন সে সুটকেস গুছিয়ে পাকিস্তানিদের হাতে ধরা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যায়। 


শেখ মুজিবুর রহমানের ভণ্ডামি দেখুন— একদিকে জনগণের সামনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে, অন্যদিকে ইয়াহিয়া এবং  জুলফিকার আলি ভুট্টোর সাথে লিয়াজোও চলমান রেখেছে। এমন একটা ভণ্ড, ক্ষমতালোভী এবং স্বার্থপর মানুষকে তবু্ও বঙ্গবন্ধু বলবো আমরা? 


এবার আসুন তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি কে দিয়েছে? কোনো ভালো ছাত্র সংগঠন দিয়েছে? না। তারে এই উপাধি প্রদান করেছে আজকের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগই।


সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ তাদের নেতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করেছে, সেটা বাংলাদেশের আপামর জনতাকে কেন মানতে হবে? হাসিনা এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামীরা তাদের পিতাকে জাতির পিতা ঘোষণা দিয়েছে, তাদের সেই পিতাকে আমাদের জাতির পিতা হিসেবে কেন মেনে নিতে হবে? 


আমরা তো এই জুলাইয় বিপ্লবেও জাতির পিতা ইবরাহিম শেখ মুজিব ঘোড়ার ডিম শ্লোগান দিয়ে মাঠে নেমেছি। শহীদ হয়েছি। এই শ্লোগানে আমাদের ছোট্ট শিশুরা পর্যন্ত শাহাদাত বরণ করেছে। তবু্ও এখনো তাকে বঙ্গবন্ধু বলতে হবে? এখনো তাকে জাতির পিতা বলতে হবে? রক্ত-সাগর পাড়ি দিয়েও?


যাই হোক, বলছিলাম শেখ মুজিব ঘোড়ার ডিমকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নেতা কর্তৃক বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করার কথা। তো কথা হলো যে, অনেকেই বলবেন— ছাত্রলীগ তো এখনই না সন্ত্রাসী সংগঠন, আগে তো ভালো ছিলো। অথচ এটাও চরম একটা ভুয়া এবং মিথ্যে কথা। ছাত্রলীগ জন্মলগ্ন থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদ আর সন্ত্রাসবাদ করেই বেড়ে উঠেছে। 


 শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়ার আরেকটা ইন্ট্রেস্টিং ব্যাপার হলো এই— তাকে ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা খুনি তোফায়েল আহমেদই এই উপাধি প্রদান করে। 


তোফায়েলকে কেন খুনি বললাম? কারণ, এই তোফায়েলও ওই একই সালে, মানে ১৯৬৯ সালে ছাত্রশিবির (তখনকার ছাত্র সংঘ) নেতা শহীদ আব্দুল মালেককে হত্যাকারী।


এখন মুজিবের মতো একজন খুনিকে একদল সন্ত্রাসী ও খুনিদের প্রদত্ত উপাধিকে জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়াটা কতোটুকু যৌক্তিক? খুনিরা তাদের খুনি ও সন্ত্রাসী নেতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিতেই পারে— যে মূলত বঙ্গশত্রু— তাকে সারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে বঙ্গবন্ধু বলাতে হবে কেন?


অথচ শেখ মুজিবের কার্যক্রম আমাদেরকে যা বলে, সেটা মূলত বঙ্গবন্ধু হবার মতো না। উল্টো বঙ্গশত্রুই হবার মতো। সুতরাং আসুন, একজন বঙ্গশত্রু, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ফ্যাসিস্ট ও প্রথম ডিক্টেটরকে আমরা বঙ্গবন্ধু না বলি। 


তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা প্রয়োজনে শেখ মুজিবুর রহমানই সম্মানের সঙ্গে বলবো। যদিও সে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচার, তবুও একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে অন্যান্য দশজন নেতার মতো তাকেও স্বাভাবিক সম্মান দেব। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলা না। তিনি যদি বঙ্গবন্ধু হয়, তাহলে বঙ্গশত্রু কে?


~রেদওয়ান রাওয়াহা

০৩.০৮.২৪ ইং

Comments

Popular posts from this blog

কেমন ছিল শেখ মুজিবুর রহমান

“শবে-বরাত ও সংস্কৃতি : কিছু প্রশ্ন কিছু কথা”

ক্রিটিক্যাল থিংকিংয়ের অপপ্রয়োগ