Posts

Showing posts from May, 2025

জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শন ও এটিএম আজহার

Image
  একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন কি? দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েও এটিএম আজহার সাহেব তার আদর্শ, রাজনৈতিক দর্শন বা চিন্তাচেতনায় একচুল পরিমাণও বিচ্যুত হননি। মুক্তিলাভের পর যখন পুনরায় তিনি তার রাজনৈতিক দর্শন প্রকাশ করেছেন, তখনই স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়ে বলেছেন: "ইসলামকে নিয়েই ক্ষমতায় যেতে চাই। ইসলামকে রেখে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমি ক্ষমতায় গেলে হয়তো মন্ত্রী হতে পারব, কিন্তু ইসলাম তো ক্ষমতায় যাবে না। ইসলামকে সাথে নিয়েই ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সার্থক হবে। শহীদ ভাইয়েদের আত্মত্যাগও সার্থক হবে।"  তিনি অন্য আরেকটি বক্তব্যে বলেছেন— "আমার জীবনে পাওয়ার মতো আর কিছু নেই। কেবল এই জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে— এটাই দেখে যেতে চাই।" আজহার সাহেবের এই ঘোষণা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শহীদ নেতাকর্মী ও কারাগারে বন্দি অবস্থায় মৃত্যু বরণকারী নেতৃবৃন্দের অভিব্যক্তিরই প্রতিফলন। তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল একটিই— ইসলামের বিজয়। শহীদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সম্ভবত ব্যতিক্রম শুধু একজনই ছিলেন— যিনি পোস্ট-ইসলামিজম' -এর কথা ভাবতেন। আজহ...

“জেন্ডার ভিক্টিমহুডের রাজনীতি”

Image
  পুরুষদেরকে সারাদিন গালি দিলেও পুরুষরা এসে জেন্ডার কার্ড ইউজ করে ভিক্টিম সাজে না। বলে না— পুরুষ জাতিকে ছোটো করা হচ্ছে, পুরুষ জাতির অসম্মান করা হচ্ছে বা এই টাইপের কোনো আজগুবি কথা।  অথচ, পুরুষ শুধু গালি খায় না, মাইরও খায়। খুনও হয়। পুরো জীবনটাই ধ্বংস হয়ে যায় তাদের। তার মানে কি নারীদের খুন হতে হয় না? হয়। কিন্তু তুলনাটা আশা করি বুঝেন এবং জানেন। যুদ্ধে, দুর্যোগে, যেকোনো সংকটে ও সংঘাতে— সব সময়, সবচেয়ে বেশি যে বা যারা মারা যায়, আহত হয়, রক্তাক্ত হয়, তারা হলো এই পুরুষ জাতি। এই যে জুলাই ম্যাসাকার গেলো, এই জুলাই ম্যাসাকারে শাহাদাত  বরণকারী প্রায় ৯৯.৫০% পুরুষই। এমনকি যারা গুলি খেয়েছে, যারা পঙ্গু হয়েছে, হসপিটালাইজড হয়েছে— তাদের মধ্যেও ৯৯%ই পুরুষ।  এভাবে প্রত্যেটা দুর্যোগে, প্রত্যেকটা দুর্ভোগে, প্রত্যেকটা সংকটে পুরুষরাই জীবন বিলিয়ে দেয়। পুরুষরাই নিজেদের শক্ত বাহু দ্বারা দুনিয়াটাকে আগলে রাখে।  পুরুষরাই নারীকে প্রটেক্ট করে। শুধু নারীকে না, পুরো মানবসভ্যতাকেই ধ্বংসের হাত থেকে হেফাজত করে।  পুরুষ যদি ধর্ষক হয় বা অপরাধ করে, তবে আবার সেই পুরুষই এগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে...

জামায়াত-শিবির কীভাবে একাত্তর ইস্যুটাকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে পারবে?

Image
  জামায়াতের জন্য, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটা নির্মম বাস্তবতা হলো— বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এমনকি কমিউনিস্ট-সোশালিস্টরাও যদি বিলিন হয়ে যায়, তবুও একাত্তর জামায়াতের পিছু ছাড়বে না। ছাড়বে না বলতে ছাড়বে না। কোনো ক্রমেই না। যদি না একটা পূর্ণাঙ্গ ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত করতে পারে তারা।  বর্তমান যে রাজনৈতিক কাঠামো, যে তাগুতি ও কুফুরি ব্যবস্থা, এই ব্যবস্থায় জামায়াত শুধু ব্যবহৃতই হবে। আজ এই গ্রুপ থেকে তো কাল ওই গ্রুপ— জামায়াত একাত্তর ইস্যুতে ছোবল খাবেই। নির্মমতার মুখে পড়বেই। আবার এই নির্মমতার কারণে আজকে কেউ সহানুভূতি প্রদর্শন করে পাশে দাঁড়াবে তো কালকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তখন অন্য কেউ এসে আবার নিপীড়ন চালাবে। আবার কেউ দু'চারটা সহানুভূতিমূলক কথাবার্তা বলবে। আবার পল্টি নেবে। একটি পরিপূর্ণ ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত করা ছাড়া, এই অসহায়ত্ব জামায়াতের পিছু কখনোই ছাড়বে না। মাত্রাটা কমবে বা বাড়বে। এই আর কি! কিন্তু, প্রশ্ন হলো, জামায়াত-শিবির বর্তমানে বিপ্লবী মানসিকতা কতখানি রাখে? কতটা শক্তিশালী পরিকল্পনা আছে একটা টেকসই ইসলামি বিপ্লব সাধনের জন্য? হ্যাঁ, তারা ইসলামি হুকুমত কায়েমের জন্যই রাজনীতি...

আন-নাহদার পতন: মুসলিম রাজনীতির পথভ্রষ্ট মানচিত্র

Image
.আজ একটা খবর পড়লাম। মনটা খারাপ হয়ে গেল।  খবরটা একদিকে ইন্ট্রেস্টিং। আবার, অন্যদিকে বিশ্ব ইসলামি আন্দোলনের জন্য কষ্টদায়ক, পাশাপাশি শিক্ষনীয়ও বটে। তিউনিসিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আন-নাহদা পার্টির নেতা, আলী লারাইদকে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। অভিযোগ— ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদি পাঠিয়েছেন তিনি। এর আগে এই পার্টির প্রধান, ড. রাশিদ ঘানুসিকেও তিন বছরের সাজা দিয়েছিল আদালত। আন-নাহদা পার্টি ও রাশিদ ঘানুসি— ইসলামি আন্দোলনের সঙ্গে যাদের পরিচয় আছে, এ নাম দুটো তাদের অচেনা নয়। যদিও, সবারই যে জানা থাকবে, তা না। একসময় আমারও ছিল না। পরে জানতে পেরেছি। রাশিদ ঘানুসি— এক সময় ছিলেন দ্বীন প্রতিষ্ঠার এক প্রতিশ্রুতিশীল মুখ। মুখে ইসলামি রাষ্ট্রের কথা, বুকে উম্মাহর ব্যথা, কর্মে খিলাফতের স্বপ্ন। মনে হতো, এ মানুষটিই বুঝি ইতিহাস বদলে দিতে পারেন। কিন্তু সময় বদলায়। মানুষও বদলায়। ঘানুসি বদলে গেলেন। এই ধারার অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মতো বাহ্যিক সুরত-সিফত তো আগে থেকেই বদলে ছিল, পরবর্তীতে চিন্তাভাবনায়ও আদ্যোপান্ত বদলে গেলেন তিনি। ইসলামি চিন্তাকে আপাদমস্তক আধুনিকতার ফ্রেমে ঢোকাতে চাইলেন। তিনি হয়ে ওঠেছিলেন “মুসল...