Posts

Showing posts from October, 2021

"প্র্যাক্টিসিং মুসলিম ও দ্বীনে ফেরা মানে কী?"

Image
"প্র্যাক্টিসিং মুসলিম ও দ্বীনে ফেরা মানে কী?" প্র্যাক্টিসিং মুসলিম, দ্বীনে ফেরা—এ-শব্দগুলো এখন একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের ওপরেই জন্ম দিয়েছেন। ফিতরাতগতভাবেই আমরা দ্বীন-ইসলামের অনুসারী। এর সমর্থনে আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি হাদিস আছে। যেখানে তিনি বলেন, "রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন প্রত্যেক সন্তানই ইসলামী ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে থাকে। অতঃপর তার মাতা-পিতা তাকে ইয়াহুদী, নাসারা অথবা অগ্নিপূজক বানিয়ে ফেলে। যেরূপে চতুষ্পদ জন্তু পূর্ণাঙ্গ জন্তুই জন্ম দিয়ে থাকে, এতে তোমরা কোন বাচ্চার কানকাটা দেখতে পাও কি? এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিলাওয়াত করলেন, فِطْرَةَ اللهِ الَّتِيْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللهِ ذلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّم ‘‘আল্লাহর ফিতরাত, যার উপর তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি রহস্যে কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল প্রতিষ্ঠিত দীন।’’[ বুখারী ১৩৫৮] এখন তো দেখি কেউ সালাত আদায় করলেই প্র্যক্টিসিং মুসলিম দাবি করে। মানে তাও হুট করেই কয়েকদিন সালাত আদায় করলেই তা দাবি করি। ...

//দ্বীনে দাখিল হও পূর্ণভাবে//

Image
সদ্য ইসলাম গ্রহণ করেছেন তাঁরা। পূর্বে ছিলেন ইয়াহুদি। তবে ইসলাম গ্রহণ করলেও তাদের মধ্যে তাওরাতপ্রীতি তখনো রয়েছে বিদ্যমান। তাই তো তাঁরা তখনো উটের গোশত ভক্ষন করছেনা। উটের দুধ পান করা থেকেও রয়েছেন বিরত। এবং শনিবারকে করে যাচ্ছেন বিশেষ তা’জিম। কিন্তু বিষয়টি মুসলামানদের কাছে ভালো লাগছেনা। তাদের এহেন আরো কিছু আচরণ মুসলমানদের নিকট ভীষণ কষ্টদায়ক হয়ে যাচ্ছে। তাই তো তাঁরা এ-বিষয়ে আল্লাহর রাসুলের কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি সব শুনেছেন। সব শুনে সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী নওমুসলিমদের ডাকলেন। তাঁরা রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ও’সাল্লাম যখন তাদেরকে উক্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, তখন তাঁরা বলেন — “হে আল্লাহর রাসুল, তাওরাত-ও তো আল্লাহরই কিতাব। আর তা ছাড়া আমরা তো খারাপ কিছু করছিনা। আমরা আল্লাহর এক কিতাব দিয়ে অন্য কিতাবকে শক্তিশালী-ই করছি কেবল। তাঁরা আল্লাহর রাসুলের কাছে এই বলে আবেদন করেছেন যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ ! আমরা তো ইসলাম গ্রহণের পূর্বে শনিবার দিনটিকে খুবই তাজিম করতাম। আপনি আমাদেরকে কিছু বিষয়ের অনুমতি প্রদান করুন। আমরা রাতের বেলায় তাওরাত তিলাওয়াত করে যেনো নামাজ করতে পারি, তাওরাতের কিছু বিধিবিধানের আনুগত্য যেনো এখনো কর...

"ধর্ম কি শুধু অন্তরে থাকার বিষয়"?

Image
  একটা শ্লোগান খুব জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ইসলামপন্থী অনেক ভাইবোন এবং সাধারণ জনগণও তা খুব করে গিলছে। আর সেটা হলো , “ পৃথিবীটা মানুষের হোক ধর্ম থাকুক অন্তরে মসজিদে আজান হোক ঘন্টা বাজুক মন্দিরে ”   আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন- পূর্ণভাবে দ্বীনে দাখিল হও।[০১] ঈমানের মানে হলো তিনটি । ১. অন্তরে বিশ্বাস ২. মুখে স্বীকৃতি ৩. সেই বিশ্বাস আর কর্মকে কাজে পরিণত করা।   ঈমানের বিষয়ে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন , ঈমানের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে স্বীকারোক্তি এবং আত্মার প্রশান্তি। আর সেটা অর্জিত হবে অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ ও সাথে সাথে তাকে আমলে পরিণত করার মাধ্যমে । [০২]   এই হলো ইসলাম। এই হলো ইসলামের ধর্মতত্ত্ব। ইসলাম তো শুধু ধর্ম নয় , এটা আমরা সকলেই জানি। ইসলাম পরিপূর্ন জীবনবিধান। অন্যান্য ধর্ম স্রেফ ধর্ম , কিন্তু ইসলামের রূপ হলো পূর্ণাঙরূপ। তাই ইসলামের উপস্থিতি থাকবে সর্বত্র। রাষ্ট্র থেকে সমাজ। পরিবার থেকে বিচারালয়। পৌরণীতি থেকে অর্থনীতি , ইসলাম সব জায়গায় সবখানেই কথা বলবে। বলে।   আল্লাহ পবিত্র কুরআনের যে আয়াতে বলেছেন “ পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্...

"আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করাতো জায়েজ-ই নেই"- প্রফেসার গোলাম আজম

Image
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, তাবলীগ জামায়াতের সাবেক অন্যতম মুরুব্বি, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সামনের সারী থেকে নেতৃত্ব প্রদানকারী ডাকসুর সাবেক জি.এস প্রফেসর গোলাম আজম রহঃ-এর একটা ভিডিও একবার সম্ভবত বাংলাভিশনে দেখেছিলাম। সেখানে তিনি বলেছেন যে, "আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করাতো জায়েজ-ই নেই"। প্রফেসার গোলাম আজম রহঃ-এর এই কথাটা টিভিতে ওনার সাক্ষাৎকারে যখন শুনেছি। তখন আমি তো আরো ছোটো। সারাক্ষণ মস্তিস্কে আবেগ টলমল করতো সরোবরের ন্যায়। তাঁর এই কথাটি আমার আবেগে আরো আঘাত হেনেছে। আমার মনে ঈমানের মশালকে দাঊদাঊ করে দ্বিগুণ-তিগুন বেগে জ্বালিয়ে তুলেছে! অথচ ওনার সংগঠনের অনেক লোকেরাও এই কথাটাকে ছড়িয়ে দিতে কার্পণ্যবোধ করে! এই আদর্শিক চিন্তাধারণ করতে সক্ষম হচ্ছেনা। ভয় পেয়ে সেক্যুলার সাজে কেউ কেউ। মু'মিন যদি হয়ে থাকি; তা হলে সত্যিই কাউকে ভয় পাবার কোনো অর্থই হয় না। সত্যিকারর্থেই গোটা দুনিয়ার কাউকেই ভয় করা জায়িজ নেই.... ওনার অনেক চিন্তার সাথে দ্বিমত করার সুযোগ রয়েছে। অনেক চিন্তাকে অগ্রাহ্য করার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণও রয়েছে। যেমন আমি ওনার ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের যে আন্দোলন, সে আন্দোলনকে সমর্থন করি...

ফররুখ আহমেদ : ফররুখ আহমেদ : মজবুত মেরুদণ্ডের এক আদর্শিক কবি

Image
সৈয়দ হাতেম আলী এবং বেগম রওশন আখতার দম্পতির সন্তান আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি ফররুখ আহমদ। কবি ফররুখ ১৯৭৪ সালের আজকের এইদিনে মৃত্যু বরণ করেন। মানবতাবাদি কবি ফররুখ জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৮ সালের ১০-ই জুন মাগুরা জেলার মাঝআইল গ্রামে। তিনি মুসলিম রেনেসাঁ বা ইসলামি রেনেসাঁর কবি হিসেবেও সমধিক পরিচিত। কারণ তাঁর কবিতার মাধ্যমে তিনি বাংলার অধঃপতিত মুসলিম সমাজেকে পুনর্জাগরণের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গিয়েছেন আমৃত্যু ।  অসহায় মানুষের হাহাকার, আর্তনাদ, অনাহারে জীবনকে যাপন করা মানুষের করুণ পরিণতি, মানবিকতার সংকট, মানুষে মানুষে সংঘাত আর সংঘর্ষসহ ইত্যাদি সকল অসঙ্গতি-ই কবির সাহিত্য সাধনার অন্যতম প্রতিপাদ্য ছিলো । এছাড়াও বাংলা সাহিত্যে ইসলাম ও ইসলামি মূল্যবোধের জাগরণ যাদের হাত ধরে, নিঃসন্দেহে ফররুখ সেসব অগ্রজদের প্রথম কাতারেরই একজন। দ্বীনি মূল্যবোধ সম্বলিত শব্দসম্ভারকে দিয়ে তিনি কোনো হীনমন্যতা ছাড়াই সাহিত্য সম্ভার গড়ে তুলেছেন। বলতে গেলে সাহিত্যের অঙ্গনে সে সময় তিনি একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন।  তিনি নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়েই প্রাথিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে কোলকাতায় এসে তালতলা ...

মুশরিকদের সাথে ইবরাহিম (আঃ)-এর যুক্তিতর্ক এবং আমাদের জন্য শিক্ষাসমূহ

Image
  ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর কওমের মানুষেরা মূর্তি পূজায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তাঁর বাবাও মুর্তি পূজারিদের দলে। এসব দেখে তিনি মানসিকভাবে ভীষণ অস্থির হয়ে পড়লেন । তাদেরকে এর অসরতা নিয়ে নিয়মিত বুঝিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু কেউ কোনো পাত্তা দিচ্ছেনা। তারা তাঁর সাথে বিবাদ-বিস্বাদ এবং ঝগড়াঝাঁটিতে জড়িয়ে পড়লো। তারা যখন তাঁর সাথে এসব নিয়ে তর্ক করতে এগিয়ে এলো , তখন তিনি তাদেরকে সুস্পষ্টরূপে জানিয়ে দিলেন —   “ আল্লাহ সম্বন্ধে তোমরা কি আমার সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও ? অথচ তিনি আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের জন্য ; আর আমরা তাঁর প্রতি একনিষ্ঠ। ” তিনি তাঁর বাবাকেও এ বিষয়ে সরাসরি বললেন — “ বাবা , আপনি কি ওই মূর্তিগুলোকে রব্ব মানেন ? আমি তো দেখছি , আপনি এবং আপনার জাতির লোকেরা সুস্পষ্ট ভুলের মধ্যে আছেন। ” দিনের পর দিন এভাবে তিনি বুঝিয়ে যেতে লাগলেন। তাদের অসরতা-অকর্মণ্যতা প্রকাশ করে যেতে লাগলেন। অতঃপর আরেকদিন তিনি পুনরায় নিজ পিতাকে বললেন — “ বাবা আপনি কেনো সেসব জিনিসের ইবাদাত করেন ? যেগুলো কানে শুনেনা , চোখে দেখেনা এবং আপনার কোন উপকার ক...